রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাযার্লয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বাড়ী নির্মাণের দুই মাসের মাথায় মেরামত করতে হয়েছে ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলায়। মেরামত করা বাড়ী গুলো উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের হাজেরা দীঘি-২ এলাকায় অবস্থিত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির জানিয়েছেন, সম্প্রতি এক ঝড়ে ১৪টি ঘরের কিছু টিন উড়ে গিয়েছিল। আমরা তা ঠিক করে দিয়েছি। তাছাড়া বাড়ীগুলো এখনো হস্তান্তর করা হয়নি, কাজ চলছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বাড়ী নিমার্ণের শুরু থেকেই নির্ন্মমানের কাজ হয়েছে। আমরা বাধা দিলেও তা কর্ণপাত করা হয়নি। এ কারণেই এক ঝড়ে একটি বাড়ীর বারান্দার তিন পিলারে মধ্যে দুই পিলার ভেঙে পড়েছে। এবং ঘরের ছাউনি টিন স্থাপনার সময় সঠিক নিয়মে কাঠ না দেওয়ায় এক ঝড়েই ১৪টি ঘরের একাধিক টিন উড়ে গেছে। আমার সবে মাত্র দুমাস আগে ঘরগুলোতে উঠেছি। এতেই এ অবস্থা সামনে যে আরো কি হবে আশংকায় তারা।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘর গুলো সাদা ও লাল ঢেউ টিনের রঙে সুন্দর দৃশ্য রুপান্তর হয়েছে। তবে বাধ সাজে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সদ্য নির্মিত ঘরগুলোর একাধিক টিনের উপর ঈট ও ভাড়ী বস্তা। এছাড়াও রান্না ও বাথরুমের ঘরের টিনের পিছন পাশে বিল্ডিংয়ের দেয়াল ফুটে করে তাতে দড়ি ও তার দিয়ে টিনের কাঠের সাথে টানা দেওয়া।একটি ঘরের আবার তিনটি পিলারে মধ্যে দুটি নুতুন করে নির্মাণ। এছাড়াও মেঝে ও পিলারের সিমেন্ট ঘসে পড়ারও অভিযোগ রয়েছে। তারা ধারণা করছেন বছর খানেক ব্যবহারের মধ্যেই এই বাড়ীগুলোর অবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়বে।

স্থানীয়দের মধ্যে অন্তত ৭ থেকে ৮ জন নারী অভিযোগ করে বলেন,ঘর নির্মাণের শুরু থেকেই বালু সিমেন্ট ও ঘরের ভিত্তি নিয়ে আমাদের খানিকটা অভিযোগ ছিলো। বিশেষ করে ঈট গাথুনির জন্য মিশ্রিত বালু সিমেন্ট নিয়ে। তারা পরিমাণে বালু বেশি আর সিমেন্ট কম দিয়ে ঘরের কাজ করেছেন। প্লাষ্টারগুলোও করেছেন দায়সারাভাবে।

পরিশেষে ঘরের ঢেউ টিনগুলোতে স্থাপনকৃত কাঠগুলোও নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সাধারণত টিনের বাতা, কোরো যেভাবে দেওয়া প্রয়োজন। সেভাবে না দিয়ে দায়সারাভাবে একটি টিনে সব মিলে ৪টি বাতা্তেই কাজ শেষ করেছে। বারান্দায় ওয়ালে ওয়াল প্লেট স্থাপন করে তারপরে টিন দেওয়ার সাধারণ নিয়ম থাকলেও তা না করেই টিন স্থাপন করা হয়েছে। এবং বাতা ও কোরো প্রয়োজনের তুলনায় কম দিয়ে টিন স্থাপন করা হয়েছে। যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ বলে দাবী বসবাস কারীদের।

এদিকে ঘরের কাঠের বিম দেওয়া হয়েছে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সমপরিমাণের কাঠ যা ঐ ঘরগুলোর জন্য তেমন কোন কাজে আসবে না বলে জানান স্থানীয়রা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও কোন লাভ হয় না বলে অভিযোগ করেন ঐ পাড়ার একাধিক মানুষ।

এ নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সামিয়ুল ম্যার্ডির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান,আমরা কাজের মান ভাল করছি। তবে টিন স্থাপন ডিজাইন অনুযায়ী হচ্ছে। এ প্রতিবেদক তার কাছে ডিজাইনের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন মুঠোফোনে বলেন, এক ঝড়ে ১৪টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আমরা তা ঠিক করেছি। ঘরগুলো এখনো হস্তান্তর হয়নি। তারা এমনিতেই ঘরে উঠে পড়েছে। আমাদের কাজ চলমান।

জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না মুঠোফোনে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব কাজ অনিয়ম করার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো। এমন অভিযোগ পেলে অব্যশই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(কেএস/এসপি/মে ২৫, ২০২১)