চাঁদপুর প্রতিনিধি : ফরিদগঞ্জে এক প্রবাসীর বাড়িতে ১২টি মোটর সাইকেল নিয়ে একদল যুবক সন্ত্রাসী কায়দায় হানা দিয়েছে। এ খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা ‘ডাকাত ডাকাত’ চিৎকার দিয়ে তাদের ধাওয়া করে সুজন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৪টি মোটর সাইকেলসহ মূল অভিযুক্ত সুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ মে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ১১নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নে। তবে জোরালো তদবিরের জোরে গভীর রাতে থানায় দুই পক্ষেরই সমঝোতার ভিত্তিতে মুচলেকা আদায় করে পুলিশ সুজনকে ছেড়ে দেয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলার কেরোয়া গ্রামের সুজন খানের নেতৃত্বে ১২টি মোটর সাইকেলযোগে একদল যুবক সৌদি প্রবাসী জাফর হাওলাদারের বাড়িতে হানা দেয়। এ অবস্থা দেখে বাড়ির লোকজন ‘ডাকাত ডাকাত’ চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ধাওয়া করে সুজন খানকে আটক করে। অপরদিকে সুজনের সাথে আসা যুবকরা এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। তবে ২টি ইয়ামাহা এফজেট, ১ টি সুজুকি জিক্সার ও ১টি টিভিএস কোম্পানির এপাসিসহ মোট ৪ টি মোটরসাইকেল রেখে যায় ওই যুবকেরা।

হামলার সময় ওই বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় সুজন খান ও তার সঙ্গীরা জাফর হাওলাদারের স্ত্রী লিজা বেগমকে মারধর করে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে তার হাতে ও গলায় থাকা স্বর্ণালঙ্কার লুট করে বলে থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা ৯৯৯-এ ফোন করলে ফরিদগঞ্জ থানার ওসির নির্দেশে এসআই আবদুর রাজ্জাক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে জনতার হাতে আটক সুজন খানসহ ৪টি মটর সাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে প্রবাসী জাফর হাওলাদারের স্ত্রী লিজা বেগম বলেন, সন্ধ্যায় বাড়িতে আমি একা ছিলাম, সে সময় হঠাৎ ২৫/৩০ জনের অজ্ঞাত সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের বাড়িতে হামলা করে। আমার গলায় অস্ত্র ধরে আমার হাতে থাকা ৬টি সোনার বালা ও গলায় থাকা একটি ২ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন (সর্বমোট ওজন প্রায় ১১ ভরি) নিয়ে যায়।

সুজনের পক্ষের লোকজন জানান, হানিফ হোসেনের ছেলে সুজন সৌদি আরবে থাকাবস্থায় জাফর হাওলাদারের কাছে টাকা পাওনা ছিলো। বিদেশে থাকাবস্থায় সুজন তার প্রাপ্য টাকা না পেয়ে দেশে এসে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় জাফর হাওলাদারের বাড়িতে হানা দেয়। বিষয়টি কেউই সহজভাবে নেয়নি বলে স্থানীয় জনতা ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার চেঁচামেচি করে তাদেরকে ধাওয়া করতে বাধ্য হয়েছে।

এ ব্যাপারে জাফর হাওলাদারের স্ত্রী তানজিয়া আক্তার লিজা বাদী হয়ে সুজন খানকে প্রধান আসামী করে ৭ জনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, সুজনের সাথে জাফর হাওলাদারের টাকা পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এরা দুজনেই আবার একে অপরের আত্মীয়। গ্রামবাসী কর্তৃক আটক সুজনকে থানায় আনার পর দুপক্ষই তাদের ভুল স্বীকার করে থানায় মুচলেকা দেয়ায় সুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে জব্দকৃত মোটর সাইকেলের কাগজপত্র যাছাই-বাছাই করে পরে সেগুলো দেয়া হবে।

(ইউ/এসপি/মে ২৭, ২০২১)