ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদী বাজারের এক কাপড় ব্যবসায়ীর লাশ তার ভাড়া বাসা হতে উদ্ধার হয়েছে। শাকিল ওরফে ভোলা (৩২) নামের এই যুবক মুলাডুলি ইউনিয়নের প্রতিরাজপুরের দুবলিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের পুত্র। শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে শহরের সরকারি করেজের সামনে রূপনগরের গলিতে (মাহাতাব কলোনী) ভাড়া বাসা হতে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

রহস্যজনক এই খুনের ঘটনায় পরিবারের লোকজন, শুভাকাঙ্খি এবং প্রতিবেশীরা নিহতের স্ত্রী মীম খাতুন (১৯) এর সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগ করেছেন। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী এবং ছোট ভাই ছাব্বির (২২) কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

নিহতের মামা মুলাডুলির ইউপি মেম্বার তারা মালিথা জানান, প্রতিরাজপুর গ্রামের নিজের বাড়ি ছেড়ে শাকিল প্রায় দশ দিন আগে শহরের কলেজ রোডের সামনে ওই বাড়ির দোতালা ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে উঠে। শুক্রবার রাত ১০.৪০ মিনিটের দিকে ভাগিনা শাকিলের ফোন থেকে স্ত্রী ফোন করে তাকে জানায়, শাকিলের কি যেন হয়েছে কথা বলছে না। এসময় মেম্বার দ্রুত বাড়িওয়ালার সহযোগিতা নিয়ে সাথে নিয়ে পাশের হাসপাতালে নেয়ার জন্য অনুরোধ করে। তিনি আরো জানান, আমি দূরে থাকায় ওই এলাকার আমার আত্মিয়-স্বজনকে ঘটনা জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে দেখে শাকিলকে মৃত অবস্থায় সামনে নিয়ে স্ত্রী মীম বসে আছে। এসময় তারা দ্রুত ঈশ্বরদী থানাকে অবহিত করেন।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর, অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান, সিআইডি টিম নিয়ে সারারাত ঘটনার আলামত সংগ্রহ এবং রহস্য উদঘাটনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।

থানার অফিসার ইনচার্জ শনিবার দুপুরে এঘটনাকে নিশ্চিত হত্যাকান্ড জানিয়ে বলেন, সারারাত প্রচেষ্টা চালিয়েও রহস্যের কোন কূলকিনারা পাইনি। নিহতের স্ত্রী মীমের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি জানান, দুইজন লোক বাসার দরজায় নক করলে সে দরজা খুলে দেয়। আগতরা এসময় তাকে চড় ও লাথি মারলে সে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। এসময় তার পা ও মূখ নিহতের পাঞ্জবি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে সে বাহির হতে বন্ধ করে দেয়া দরজার কাছে গিয়ে শব্দ করলে বাড়িওয়ালা বাইরে থেকে বন্ধ দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে বাঁধন খুলে দেয়। পরে শোবার ঘরে গিয়ে বিছানার উপর শাকিলকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মামা শ্বশুর তারা মালিথাকে ফোন দেয়।

ওসি আরো জানান, শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে ধস্তাধস্তির চিহ্ণ থাকার কথা কিন্তু সে ধরণের কোন চিহ্ণ নেই। দুই থাপ্পরেই মীম জ্ঞান হারালো এবং তার হাত বাঁধা ছিলো না এটিও রহস্যজনক। মীম আগন্তক খুনিদের চিনতে পারে নাই বলে জানিয়েছেন। বিভিন্ন আলামত ও জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ড নিয়ে যে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে, এধরণের ঘটনা হাজারে একটা পাওয়া যায়। লাশ পোস্টমর্টেম করতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রিপোর্ট পাওয়ার পর কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তা পরিস্কার হবে।

ভাল ব্যবহার ও আচরণের কারণে শাকিল নিহত হওয়ার খবর ঈশ্বরদী বাজার ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান শাকিল পৌর মেয়র ইসাহক আলী মালিথার সম্পর্কে নাতি ও অত্যন্ত ঘনিষ্টজন ছিলেন।

(এসকেকে/এসপি/মে ২৯, ২০২১)