রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় রোববার মধ্যরাতে (৩০মে) ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়ির হাটের ৩’শ মিটার স্পার বাঁধটির সামনের অংশ প্রায় ১৫০ মিটার নিমিষেই ধ্বসে পড়েছে। 

পাশ্বর্বতী একই উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের গাবুর হেলান ক্রোসবাধটির অবশিষ্ট অংশ টুকুর দক্ষিণপাশও ধ্বসে পড়ে তিস্তা নদীর গর্ভে। বাঁধ দু’টি ভেঙ্গে যাওয়ায় দু’টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম তিস্তার ভাঙ্গনের শিকার হওয়ার আশংকা করছে বাঁধের পাড়ের মানুষজন।

এলাকাবসাীরা জানান, গত বছর তিস্তার ভয়াবহ ভাঙ্গনে বুড়িরহাট স্পারবাঁধটির পুরো অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এনিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সংবাদ প্রচার হলে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ভেঙ্গে যাওয়া বুড়িরহাট স্পারবাঁধটি পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিক বাঁধটি পুনঃ নির্মাণের জন্য কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) নির্দেশ দেন। গত বছর কুড়িগ্রাম পাউবো স্পারবাঁধটি দায়সারাভাবে বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে জিও বস্তা দিয়ে বাধের চারপাশ বেঁধে দেন। গত কয়েকদিন থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রোবার মধ্যরাতে(৩০মে) আবারো ওই স্পারবাঁধটির সামনের অংশের প্রায় ১৫০মিটার ধ্বসে নদী গর্ভে বিলীন হয়।

এছাড়া একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন বিদ্যানন্দের গাবুর হেলান ক্রোসবাধটিও গত বছর ভেঙ্গে যায়। এটিও গত বছর মেরামত করা হলেও এবারও ক্রোসবাঁধটির কিছু অংশ ধ্বসে পড়ে তিস্তা নদীতে। বুড়িরহাট স্পার বাঁধটির পাশেই বুড়িরহাট বাজার সহ একটি মসজিদ এবং গাবুর হেলান ক্রোসবাঁধটির উপরেই একটি মসজিদ সহ একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে রয়েছে। ক্রোসবাধ দু’টি ভেঙ্গে গেলে প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক শত পরিবারের বাস্তুভিটে হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয়দের দাবী টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা না হলে জিও ব্যাগ দিয়ে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন ঠেকানো সম্ভব না।

ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার বলেন, বুড়িরহাট স্পারবাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর যেভাবে মজবুত করে কাজটা করার কথা ছিল হয়তো তা না হওয়ায় এবারও পানির স্রোতে ভেঙ্গে পড়লো। খবর পেয়ে ৩০মে রোববার দুপুর দেড়টায় রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম বুড়িরহাট স্পারবাঁধটি পরিদর্শন করেন। এসময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি মাহমুদ হাসানকে পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম বলেন, নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মহাদয়ের সাথে কথা বলবো। কুড়িগ্রাম পাউবোর এসডি মাহমুদ হাসান বলেন, স্পারবাঁধটি পুনঃসংস্কারের জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে। জাতীয় স্বার্থে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ভাঙ্গন কবলিত জায়গার মেরামত সহ জিও ব্যাগ ভর্তি করতে হবে। বালু না হলে বাঁধ রক্ষা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। এসময় রাজারহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুর মন্ডল সাবু উপস্থিত ছিলেন।

(পিএস/এসপি/মে ৩০, ২০২১)