রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সংসারের অসচ্ছলতার কারণে ও বারবার কণ্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় নিজের আট দিন বয়সী কণ্যা সন্তানকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রাম থেকে বুধবার দুপুর ১২টার ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মৃত শিশুর মা শ্যামলী ঘোষ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আটককৃত শ্যামলী ঘোষ তালা উপজেলার রায়পুর গ্রামের মানিক ঘোষের স্ত্রী।

রায়পুর গ্রামের রণজিৎ ঘোষ জানান, গত ২৫ মে রাত ৯টার দিকে বাড়িতে একটি কণ্যা সন্তান প্রসব করেন তার বউদি শ্যামলী ঘোষ। এতে অখুশী হয়ে পরদিন দাদা মানিক ঘোষ বাড়ি থেকে চলে যান। ৩১ মে রাতে মায়ের পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় নিখোঁজ হয় ওই শিশুটি। বুধবার সকাল ১০ টার দিকে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির পুকুরে নবজাতকের লাশ ভাসতে দেখে গ্রামবাসি পুলিশে খবর দেয়।

তিনি আরো জানান, তিন কণ্যা সন্তানের পর আবারো কণ্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ বাঁধে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দাদা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় অভাবের তাড়নায় রাতের আঁধারে বউদি ওই বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলে।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী রাসেল জানান, বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃত শিশুর মা শ্যামলী ঘোষ নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করে।

এ ঘটনায় মানিক ঘোষের চাচাত ভাই রণজিত ঘোষ বাদি হয়ে বুধবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। শ্যামলী ঘোষ বুধবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

(আরকে/এসপি/জুন ০২, ২০২১)