শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : উত্তরের শষ্যভান্ডার দিনাজপুরে এবার ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে, হাট-বাজারে ধানের মূল্য ভালো পাওয়ায় সরকারি গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে, কৃষক। এতে, করোনা পরিস্থিতিতে চলতি মৌমুমে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সাফল্য অর্জনে খাদ্য বিভাগ প্রচার-প্রতারণা ও অ্যাপের সাহায্যে লটারীর মাধ্যমে জোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তারপরও ধান সংগ্রহ অধিযান ব্যাহত হওয়ার আশংকাই করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

করোনা পরিস্থিতিতে অ্যাপের সাহায্যে লটারীর মাধ্যমে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের জন্য কৃষককে অবগত করণে প্রচারাভিযান জোরে-শোরে চালিয়েছে, দিনাজপুর খাদ্য বিভাগ। সরকারিকে ধান দেয়ার জন্য অনলাইনে কৃষকের আবেদন ব্যাপক সাড়াও পড়েলেও সরকারি গোডাউনে ধান দিতে আগ্রহ নেই কৃষকের। কারণ.এবার হাট-বাজারেই কৃষক ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন।

দিনাজপুরের বড় ধানের বাজার আমবাড়ী হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক রেজাউল করিম জানালেন,তিনি ২২ মন ধান এনেছিলেন। ইতোমধ্যে তা বিক্রি হয়ে গেছে, প্রতি মন ৯’শ ৪৫ টাকা দরে। একই কথা জানালেন,সদরের গোপালগঞ্জ হাটে ধান বিক্রি করতে আসা এমাজ উদ্দিন। তিনি ৯’শ ৪০ টাকা দরে প্রতিমন ধান বিক্রি করেছেন।

জেলার বেশ কয়েকটি হাট-বাজার সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এবার প্রকার ভেদে প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮শ থেকে সাড়ে ৯’শ টাকায়। তবে এবার মোটা চালের চাহিদা থাকায় বেশী দামে ধান কিনছেন মিল মালিকরা। এজন্যই বাজারে বোরো ধানের ভালো দাম রয়েছে। দাম ভালো থাকায় তাদেরও ভালো ব্যবসা হচ্ছে বলে জানালেন বাজারে ধান ব্যবসায়ীরা। ধান ব্যবসায়ী শফিকুর নেওয়াজ জানালেন, মিল মালিকরা মোটা ধানের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানালেন, জেলার ১৩টি উপজেলায় এবার এক লাখ ৭১ হাজার ৪’শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে আরো বেশী জমিতে। ব্রী ধান-২৮ ও ব্রী ধান-২৯ এর আবাদ হয়েছে বেশি। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার কৃষক ধানের ভালো ফলন পেয়েছে। উৎপাদিত ধান থেকে এবার ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েেেছ।

দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম.সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন,এবার জেলায় ২৭ টাকা কেজি দরে ২৪ হাজার ১’শ ৫২ মেট্রিক টন ধান এবং ৪০ টাকা কেজি দরে ৯১ হাজার ৮২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং৩৯ টাকা কেজি দরে ৮ হাজার ৪’শ ৬৬ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ নির্ধারণ করেছে খাদ্য বিভাগ। ৭ মে শুরু হওয়া এই সংগ্রহ অভিযান চলবে ১৬ আগষ্ট পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে, ১৬ হাজার ২’শ ২৫ মেট্রিক টন। সিদ্ধ চাল ২৬ হাজার ৯’শ ৯০ মেট্রিক টন এবং সিদ্ধ চাল ৩’শ ৯ মেট্রিক টন সংগ্রহ হয়েছে।

বাংলাদেশ চালকল মালিক গ্রুপের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন জানিয়েছেন,,তারা লোকসানের পরও এই করোনা পরিস্থিতিতে সরকারকে সহায়তায় চাল দিচ্ছেন। তাই,তাদের লোকসানের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারের কাছে প্রনোদনার দাবী তুলেছেন তিনি।

হাট-বাজারে ধানের মূল্য ভালো পাওয়ায় সরকারি গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে,কৃষক।এতে,করোনা পরিস্থিতিতে চলতি মৌমুমে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সাফল্য অর্জনে খাদ্য বিভাগ প্রচার-প্রতারণা ও অ্যাপের সাহায্যে লটারীর মাধ্যমে জোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তারপরও ধান সংগ্রহ অধিযান ব্যাহত হওয়ার আশংকাই করছেন,সংশ্লিষ্টরা।

তবে, দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম.সাইফুল ইসলাম জানালেন,,আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় কৃষক ধানের অদ্রতা রক্ষায় শুকাতে পারছেন না। অন্যদিকে বাজারেরই দাম ভালো পাওয়ায় তারা সরকারকে ধান দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে, ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য অর্জনে তারা আশাবাদি।

বাইরের বাজারে ধানের মূল্য ভালো পাওয়ায় এবার সারকারি খাদ্য গুদানে ধান দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে,কৃষক।তবে, সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অধিযান সফল করতে এবার তৎপর হয়ে উঠেছে খাদ্য বিভাগ।

(এস/এসপি/জুন ০৩, ২০২১)