উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : নিজের গর্ভজাত সন্তানদের থেকে কোনো ধরনের সহায়তা না পেলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির সহায়তায় বসতঘর পেলেন প্রায় ৮০ বছর বয়সী অহিদা বেগম। স্বামীর ভিটেমাটিতে স্বামীর স্মৃতির ঘর হারিয়ে পাগলপ্রায় অহিদা বেগম ফের ঘর পেয়ে যারপরনাই খুশি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি উপরে। 

এখন স্বামীর সম্পত্তির হিস্যাটুকু বুঝে পেলেই শান্তিতে মরতে পারবেন বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান বয়সের ভারে ন্যুজ এই নারী। অহিদা বেগম হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের জাকনী বেপারী বাড়ির মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। আব্দুল কাদের প্রায় ১০ বছর পূর্বে মারা গেছেন। সেই থেকে অহিদা বেগমের কপালে জুটেছে অনাদর আর অবহেলা। এই দম্পতির ৩ ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অহিদা বেগমের ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে বাচ্চুর সাথে থাকেন তিনি। সম্প্রতি বাচ্চু মূল বাড়ি ছেড়ে বাড়ির পূর্ব পাশে বাগান বাড়িতে গিয়ে বসতঘর তৈরি করে বসবাস করেন। অহিদা বেগমের মেজো ছেলে আব্দুর রশিদ আর ছোট ছেলে শাহ আলম বাড়িতে থাকে না। মেয়ে রাবেয়া স্বামীর বাড়িতে থাকেন।

বেশ কয়েক বছর আগে মেজো ছেলে আব্দুর রশিদ মূল বাড়ির বসতঘরের অংশসহ পৈত্রিক ভিটেমাটির আড়াই শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন একই বাড়ির প্রবাসী আবুল খায়েরের কাছে। উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করা নিয়ে সে সময় মা ও ভাইদের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় আব্দুর রশিদের। এ নিয়ে পরে মামলা-মোকদ্দমাসহ স্থানীয়ভাবে অনেক সালিস হয়েছে। কিন্তু সমাধান আর হয়নি।

আব্দুর রশিদ থেকে ক্রয় করা জমির ক্রেতা একই বাড়ির প্রবাসী খায়ের তার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে তথা অহিদা বেগমের বসতঘর ভেঙ্গে সরিয়ে দিয়ে দখলে নেয় গত ২৩ মে। উক্ত জমি দখলে নিতে গিয়ে অহিদা বেগমের স্বামীর বসত ঘরটির বেশ ক্ষতিসাধনসহ বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে ফেলা হয়। এতেই ভিটেমাটিসহ বসতঘর হারা হয়ে পড়েন বৃদ্ধ এই নারী।

এরপরেই বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের। তিনি ঐ দিনই বিষয়টি দেখে তাঁকে জানানোসহ অহিদাকে ঘর করে দেবার জন্যে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদকে নির্দেশ দেন।

এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম স্যার থেকে ম্যাসেজ পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ডেকে আনি। ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন গাজীর সহায়তায় অহিদা বেগমের স্বামীর ভিটায় নতুন ঘর নির্মাণ করার ব্যবস্থা করি। এরপরে অহিদা বেগমের স্বামীর ভিটায় নতুন ঘর নির্মাণ হলে আমরা এই ঘরে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ ব্যবস্থা করে দেই। সর্বশেষ এমপি স্যারের নির্দেশে ঘরের চাবি অহিদা বেগমের হাতে তুল দেয়া হয়।

(ইউ/এসপি/জুন ০৪, ২০২১)