রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির মুখে সাতক্ষীরা জেলায় আজ শনিবার সকাল থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামি ১১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউনের মেয়াদ থাকবে বলে জেলা প্রশাসন ঘোষনা করেছে। 

লকডাউন চলাকালে সব ধরনের বাধা নিষেধ মেনে চলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। একই সময় শহরে ভ্রাম্যমান আদালত এবং পুলিশ টহল থাকবে। এছাড়া যশোর ও খুলনা থেকে সাতক্ষীরা জেলায় প্রবেশের মুখে বেশ কয়েকটি চেকপোস্টও বসানো হয়েছে। লকডাউন চলাকালে ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকছে। তবে বন্দরের সব বাজারঘাট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এই সময়কালে বাংলাদেশ ও ভারতে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে বৈধ ও অবৈধ পন্থায় যাতায়াত পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ৫ দিনে অবৈধপথে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় ২৯জন বাংলাদেশী ও একজন পাচারকারি আটক হয়েছে বিজিবি’র হাতে।

তবে লকডাউন শুরু হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাতক্ষীরার ভাসমান খেটে খাওয়া মানুষ। তারা বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের বিকল্প নেই জানালেও কর্ম হারিয়ে সংসারে কিভাবে হাঁড়ি জ্বলবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক এক বৈঠকে এই লকডাউনের ঘোষনা দেওয়া হয়। শুক্রবার দিনভর মানুষের চলাচল ছিল চোখে পড়ার মত। তারা সপ্তাহব্যাপী বাজার সওদা করার চেষ্টা করেছেন।

লকডাউন চলাকালে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য কেনাবেচা করতে পারছে। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসসহ মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা রয়েছে। রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, মাহিন্দ্র, নছিমন, করিমন সবই চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে লকডাউনের আওতায় নেই ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসেবা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহ জরুরী সেবার জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন। এই সময়ে সকলকে মাস্ক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, করোনা পজিটিভ নিয়ে সাতক্ষীরায় ২৪৫ জন রোগীর মধ্যে ৩২ জন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২০ জন সদর হাসপাতালে ও ১৯৩ জন হোম কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় ১৮৮ জনের নমুনা পরিক্ষা করে ৮৯ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। গতকাল সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে।

সাতক্ষীরা ট্রাফিক সার্জস মামুন হোসেন জানান, তারা লকডাউন যাতে সর্বাত্মক হয় সেজন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

(আরকে/এসপি/জুন ০৫, ২০২১)