কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী আটকের প্রতিবাদে টেকনাফ স্থল বন্দরে অনিদির্ষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, আমদানী-রপ্তানিকারক সমিতি ও ট্র্রাক মালিক-শ্রমিক এসোসিয়েশনের আহবানে ডাকা ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে টেকনাফ স্থল বন্দরে সকল প্রকার পণ্য উঠা-নামা বন্ধ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে,কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবা বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার ইয়াবাসহ ৫ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি-৪২ ) এর সদস্যরা।
টেকনাফস্থ বিজিবি ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, সোমবার পৃথক অভিযানে বিজিবির সদস্যরা ২৪০ টি ইয়াবা সহ ৫ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে সোমবার দুপুর ১ টার দিকে টেকনাফের জালিয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪৬ টি ইয়াবা সহ মো. জিয়াবুল (৩১) ও ৪৭ টি ইয়াবা সহ মো. আয়াজ (২৯) নামের ২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তারা টেকনাফ মধ্য জালিয়াপাড়ার হাজী আমির হোসেনের পুত্র।
একই দিন বিকাল সাড়ে ৫ টায় টেকনাফের হারিয়াখালী নামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আব্দুল হামিদকে ৫০ টি ইয়াবাসহ আটক করা হয়। সে টেকনাফের সাবরাং এলাকার মো. আব্দুল বারী পুত্র। সোমবার অপর এক অভিযানে বিকাল ৪ টার দিকে টেকনাফের পশ্চিম লেদায় অভিযান চালিয়ে মো. হানিফ (২৫) নামের এক যুবককে ৪৯ টি ইয়াবাসহ আটক করে বিজিবির সদস্যরা। সে একই এলাকার কবির আহম্মেদের পুত্র।
এছাড়া বিজিবির সদস্যরা রোববার দিবাগত মধ্যরাতে হ্নীলা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রশিদ আহম্মেদ (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে ৪৮ টি ইয়াবাসহ আটক করে। সে টেকনাফের পূর্ব ফুলের ডেইল এলাকার মৃত মো. হাসনের পুত্র। আটকদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দাযের করা হয়েছে।
এদিকে আটকদের মধ্যে ২ জনকে টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী দাবী করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য টেকনাফ স্থল বন্দরে ধর্মঘট ডেকেছে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, আমদানী-রপ্তানিকারক সমিতি ও ট্র্রাক মালিক-শ্রমিক এসোসিয়েশন ।
সোমবার রাত ৯ টায় সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি ও টেকনাফ ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি দিদার হোসেন।
এতে তিনি বলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মো. আয়াস ও সদস্য জিয়াবুল হোসেনকে বিজিবি সদস্যরা রবিবার দিবাগত রাত ২ টায় বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সোমবার দুই সহোদর ব্যবসায়ীকে আলাদা ৪৬ টি ও ৪৭ টি ইয়াবা দিয়ে থানায় সোপর্দ করে থানায় মামলা দায়ের করে। এর আগে সোমবার দুপুরে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় বিজিবি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে টেকনাফ স্থল বন্দরের সমস্ত ব্যবসায়ী কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, বিজিবির দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটককৃতদের মুক্তি এবং এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ৩টি সংগঠন।
এ বিষয়ে টেকনাফস্থ বিজিবি ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টেকনাফ স্থল বন্দরের অপারেশন ম্যানেজার আবু নূর খালেদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থলবন্দরের সকল প্রকার পণ্য উঠা-নামা বন্ধ রয়েছে।
(টিটি/এএস/এপ্রিল ২২, ২০১৪)