দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুর শহরের  আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দাড়াতেই নানা ছুটে চলা মানুষের মাঝে একটি শিশু কণ্ঠস্বর এই বেলুন নেবেন খেলনা নেবেন, হাওয়াই মিঠাই খাবেন, ঘুরে তাকাতেই দেখি ১০-১২ বছরের একটি শিশু বুকের মাঝে বাঁশের সাথে আলনা করা নানা সামগ্রী বহন করে হকারী করছে। ভারি মিষ্টি চেহারা, কি যেন না বলা কথা তার ভেতরে। কাছে ডেকে আনলাম নাম পরিচয় জানতে চাইলাম একটু ইতস্ত বোধ করলো। একটু দুষ্টুমির ছলে কথা বলে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। তারপর সে বলল তার নাম হৃদয় (১২) বাড়ী ময়মনসিংহ হানিসা পূর্ব থালা এলাকায়।

করোনা পরিস্থিতিতে সংসারে অভাব নেমে এসেছে পিতা নাজিমুদ্দিন ঘাটে-মাঠে এটা সেটা করে। মা শরিফা বাসার কাজ করে তিন ভাইয়ের মধ্যে সে ২য় চতুর্থ শ্রেণিতে পরছিল। স্কুল বন্ধ থাকায় তার মা এলাকার পরিচিত মোজ্জেল এর সাথে ফরিদপুর পাঠায় প্রতিদিন দুই শত টাকা মায়নায়। প্রতিদিন কত আয় হয় জানতে চাইলে সে জানায় আটশত টাকা থেকে এক হাজার টাকা। তা যাই হোক সে ওই দুইশত টাকাই পাবে। শহরের রথখোলা এলাকায় মালিকের বাসায় থাকে। এ রকম আরও ৫-৬ শিশু রয়েছে এলাকায়। তার অপর দুই ভাই একই রকম কাজে নারানগঞ্জ গেছে।

বড় হয়ে কি হতে চাও জানতে চাইলে সে জানায়, বড় হয়ে লেখাপাড়া করতাম চাই। আমগো দুঃখ জেন আর না থাকে। অচেনা এই সব স্বপ্নময় শিশু স্বপ্ন সংগল্পের পাশে স্ব স্ব এলাকার ধনীরা যদি একটু দাড়াত তাহলে আমাদের সময় ও দেশের প্রজন্ম গড়ে তুলতে সহজ হতো।

(ডিসি/এসপি/জুন ১৭, ২০২১)