শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরের সদরে চলমান লকডাউন আরও একসপ্তাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি এক সভায় আজ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ১৫ জুন থেকে শুরু একসপ্তাহের লকডাউন আজ রাত ১২ টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আরও একসপ্তাহ বৃদ্ধি করে ২৮ জুন রাত ১২ টা পর্যন্ত করা হয়েছে।

এদিকে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে, আরও দুই জনের। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় মৃত্যু ১৫৩ জন ২৪ ঘন্টায় নতুন আক্রান্ত আরো ১২৩ জন। বর্তমানে করোনা রোগী ১০৬৪ জন। হাসপাতালে ভর্তি ১০৯ জন। ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে ৩৮৩ জন।হোম আইসোলেশ্নে ১০০৭ রয়েছেন। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস।

সদরে লকডাউনে মানুষ ও যেকোনো যানবাহন চলাচলের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে হালকা যানবাহন ও মানুষজন সড়ক মহা সড়কে অবাধে বিচরন করছে। তবে, লকডাউন বাস্তবায়নে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসনের মদদে শহরের অধিকাংশ প্রবেশ পথগুলোতে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেট দিয়ে গতিরোধ করতে কাজ করছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বেশ কিছু উৎসুক ব্যক্তি। এতে অসুস্থ রোগীদের জরুরি চিকিৎসায় হাসপাতালে প্রেরণ, অগ্নি নিরাপন, চুরি-ডাকাতি ঠেকানো সহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে অনেকেই। কিন্তু, লকডাউনের নামে বাঁশডাউনের স্থানগুলোর ভেতরে চলছে, নানা অপরাধ মুলক কার্যক্রম। বেশ কিছু বাঁশডাউন এলাকায় দোকান-পাঠ খোলা রেখে দলবেঁধে আড্ডা, নেশা দ্রব্য বিক্রি, বিকট শব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে নাচ-গান সহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

লকডাউনের মধ্যেও সড়কগুলোতে আটো রিস্কা-ইজিবাইক চলাচলের সংখ্যাই বেশি। ওষুধ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান বাদে অন্যান্য দোকানপাটসহ বিপনী বিতানগুলো বন্ধ থাকার বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও অনেক দোকান-পাঠ অর্ধেক ঝাপ ফেলে খোলা রেখেছে। ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ টহল এলেই ওইসব দোকান-পাঠ সাময়িক বন্ধ থাকছে। এভাবেই খোলা-বন্ধের লুকোচুরি চলছে।

লকডাউন কি তা এখনো বুঝে উঠতে পারছেনা কেউ। লকডাউনের অর্থ চচ্ছে,অবরুদ্ধ। নিজেকে অবরুদ্ধ করলেই লকডাউন বাস্তবায়িত হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়াই হচ্ছে, লকডাউন। কিন্তু, প্রয়োজন ছাড়াই সড়কে বাইক নিয়ে পায়তারা, বন্ধু নিয়ে আড্ডা, নেশা সংগ্রহ এবং পানে অনেক তরুণ-যুবককে রাস্তায়, মোড় এবং বাঁশডাউনের ভেতরে আড্ডা দিয়ে দেখা যাচ্ছে। অনেকে আবার বাইক নিয়ে বেপরোয়া ছুটে বেড়াচ্ছে। বাঁশডাউন দিয়ে লকডাউন বাস্তবায়ন করা সম্ভব- এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

(এস/এসপি/জুন ২১, ২০২১)