কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনীর ভয়ে ও তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে না পেরে ভয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ১৫০ পরিবার।

গ্রামছাড়া পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন জামালপুর গ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বাহিনী প্রধান আরিফের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ওই গ্রামের সাধারন মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়, গরু-ছাগল লুট করে ভুরিভোজ, ক্ষেতের ফসল লুটসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত করলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ভয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।

এছাড়াও সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকিতে গ্রাম ছাড়া অব্যাহতও রেখেছে অনেক পরিবার। সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনীর ভয়ে বৃহস্পতিবার আব্দুল খতিব, আব্দুল ওহাব, তুজাম, শাজাহান আলী, গোলাম মোস্তফা, বিদু ও স্বপনসহ তার আত্মীয় স্বজনরা জামালপুর গ্রাম ছেড়ে মহিষকুন্ডি গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।

এছাড়াও গত ৪দিনে ওই গ্রামের অন্তত ১৫০ পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনী ভয়ে জামালপুর গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসা দরিদ্র কৃষক আব্দুল খতিব জানান, সন্ত্রাসী আরিফ ও তার লোকজন জোর করে তার পোষা ছাগল জবাই করে খেয়ে নিয়েছে।

এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ সন্ত্রাসী আরিফকে সাথে নিয়ে আমার বাড়িতে তদন্ত করতে আসলে পুলিশের সামনেই সন্ত্রাসী আরিফ অস্ত্র উচিঁয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। সন্ত্রাসী আরিফের কাছে টাকা খেয়ে পুলিশ যেখানে সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেয়, সেখানে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়।

তাই ছেলে-মেয়ে ও পরিবারকে নিয়ে বাপের ভিটা ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়ি জামালপুর গ্রাম ছেড়ে মহিষকুন্ডি গ্রামে আশ্রয় নেয়া আতাউল, জিয়াউল ও আশরাফ জানান, সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনীর ভয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে এসেছি, কারন ওই সকল সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তাদের ভাই স্বপনকে বিনা অপরাধে মিথ্যা মামলায় সন্ত্রাসী আরিফের কথামত পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল হালসানার নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এরপরে হয়তো পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসী আরিফ আমাদের গুলি করে মারবে। তাই প্রান ভয়ে আমরা নিজ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রাগপুর ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনী ওই এলাকার ত্রাস। তার ভয়ে এলাকার অন্তত ১৫০ পরিবার গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। সন্ত্রাসী আরিফ বাহিনীসহ ওই এলাকার সব সন্ত্রাসীদের বিষয়ে পুলিশকে অবগত করেছি। কিন্তু পুলিশ কোন কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। তাই তাদের ভয়ে এলাকার নিরীহ মানুষ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি এনামুল হক জানান, কোন নিরীহ বা সাধারন মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে না। সম্প্রতি জামালপুর গ্রামের দুই দল চোরাকারবারীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এতে ৩৫ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৩০জন আসামী হওয়ায় ওইসব আসামী বা আসামীর লোকজন বা আত্মীয় স্বজন গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তাছাড়া ওই গ্রামে সার্বক্ষনিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

(কেকে/এইচআর/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৪)