নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন এনায়েতনগর এলাকায় ডিশ ব্যবসায়ী এমরান তার অফিসে ভাঙচুর এবং পিস্তল নিয়ে হামলার নাটক সাজিয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করছেন উক্ত এলাকার স্থানীয়বাসীরা। তাদের ধারণা, সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েতনগর পশ্চিমপাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী পদ নিয়ে ডিশ ব্যবসায়ী এমরান হোসেন মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিক এমরান হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, অফিসের গ্লাস ভাংচুর করা এবং অফিসের সামনে বোমা সদৃশ একটি বস্তু দেখতে পাই। অফিসের ভিতরে ঢুকে দেখতে পাই সিসিটিভি ক্যামেরার ডিডিআর ও হার্ডডিস্ক নাই। তাই সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এমরানের এই কথা পুরো নাটক বলে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর স্থানীয় মুসল্লিরা কয়েকজন সাংবাদিককে জানান। মুসল্লিরা বলেন, ঘনবসতি এলাকায় রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। দিন-রাত সর্বদাই মানুষের আনাগোনা। সেখানে এই ধরনের কাজ অসম্ভব। এমরান তার পুরো এলাকায় ১৯টি সিসি ক্যামরা বসিয়েছে। এখন যদি সিসিটিভি ক্যামেরার ডিডিআর ও হার্ডডিস্ক চুরির নাটক না সাজায় তাহলে এলাকাবাসী বলবে এমন কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেনি। তাছাড়া প্রমাণ হিসেবে এমরান হোসেনের সিসি ক্যামরা চেক করতে বলা হবে। তাই যাতে সিসি ক্যামরায় তার অফিস ভাংচুর, বোমা ও গুলির নাটক ধরা না পড়ে যায় তাই আগে থেকেই সিসিটিভি ক্যামেরার ডিডিআর ও হার্ডডিস্ক চুরির নাটক সাজিয়ে পুলিশকে গোমড়া বানানোর চেষ্টা করেন এমরান ।

উল্লেখ্য, ইমরান অবৈধভাবে মোতাওয়াল্লী পদ দখল নিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক সুলতান মাহমুদ আদালতে মামলা করেন। যার নাম্বার ৫৯/২০২১ইং। উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন মহামান্য হাইকোর্ট ২১ দিনের মধ্যে ইমরানকে মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লী পদটির কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে স্থগিত না করে কেনো অবৈধভাবে পদ দখল করা হয়েছে তার কারণ দর্শাতে বলেছিলেন। সেই কারণ দর্শানোর আগেই এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে এমরান হোসেন তার ডিশের অফিসকে সাংবাদিকের অফিস বলে ভাঙচুরের নাটক সাজিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করেছে বলে এলাকাবাসীরা দাবি করছে।

এ বিষয়ে গতকাল গোদনাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক সেকান্দার প্রধান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুলতাম মাহমুদ, আওয়ামলীগ নেতা জলিল মোল্লা, মোবারক হোসেনের সাথে সাংবাদিকরা কথা বললে তারা জানান, ঘনবসতি এলাকায় পিস্তল নিয়ে হামলার ঘটনাও নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রেষ্ঠ কাউন্সিলর। তিনি এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে বছরকে বছর কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে আজ বোমার ঘটনা, পিস্তলের নাটক আমাদের সমাজের সুনাম নষ্ট করেছে। পুলিশকে মিথ্যা বুঝিয়ে তাদেরকে গোমড়া করার চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। তারা আরো বলেন, অবৈধ মোতাওয়াল্লী এমরান মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে এই জঘন্য নাটক সাজিয়েছে তা আমাদের কাছে সুস্পষ্ট। সে ভেবেছিলো শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় আমরা মসজিদে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কথা মুসল্লিদের জানাবো। সেই কারণে চক্রান্ত করে অফিসে ভাঙচুর ও সিসি টিভির হার্ডডিস্ক চুরির নাটক সাজিয়ে পুলিশ দিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

(এস/এসপি/জুন ২৭, ২০২১)