উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় দুর্বৃত্তদের হাতে অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল আমিন খুন হয়েছেন ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকালে শাহরাস্তি উপজেলার পৌর ৪নং ওয়ার্ড নাওড়া গ্রামের (রেল ক্রসিং সংলগ্ন) আমিন সাহের বাড়ির নূরুল আমিন(৭০) নামে এক বৃদ্ধ দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছেন। তার স্ত্রী কামরুন নাহারকে গুরুতর আহত অবস্থায় সকালে পুলিশের সহযোগীতায় ঢাকা একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ প্রশাসন ও প্রত্যাক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে নাওড়া পাটওয়ারী বাড়ি মসজিদের সভাপতি শামছুল আলমের কাছে নিহতের মেজো মেয়ে কল করে জানান বাবার ফোন বন্ধ রয়েছে। ওই সময় শামছুল আলম বাড়িতে গিয়ে দেখেন প্রধান ফটকে তালা মারা। এ সময় তার সাথে থাকা শামসুল আলম নামে এক যুবক ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানায়। ঘটনাস্থলে ভবনের জানালা দিয়ে নিহতের স্ত্রীকে আহত অবস্থায় দেখতে পায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

শাহরাস্তি থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল মান্নান খবর পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করার কথা বললে তারা পুলিশ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। পুলিশ এসে প্রধান ফটকের তালা ভেঙ্গে গুরুতর আহত কামরুন্নাহারকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য এম্বুলেন্স যোগে ঢাকা প্রেরণ করে। নিহত নূরুল আমিনের লাশ ভবনের ছাদে পাওয়া যায়। ওই সময় তার মুখে পায়ের মৌজা ও মাথায় কোপ দেয়ার আঘাত দেখতে পায়। এমনকি তার শরীরের সকল স্থানে পোকামাকড় দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানায়, নিহত নূরুল আমিন নাওড়া পাটওয়ারী বাড়ি জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক। প্রায় ৭-৮ বছর পূর্বে বড়ুরা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার স্ত্রী একই কার্যালয়ে কর্মরত থেকে ৬ মাস পূর্বে অবসরপ্রাপ্ত হন। তিন মেয়ে ও এক ছেলে পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় বসবাস করে। অবিবাহিত ছোট মেয়ে তার ভাইয়ের বাসায় ছিলেন।

এই বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের বন্ধু শামছুল আলম বলেন, মেজো মেয়ের কল পেয়ে দ্রুত তার বাড়িতে যাই ও পুলিশকে জানাই।

মেজো মেয়ে জান্নাতুল নূর মিলি জানায়, ২৯ জুন বাবার সাথে কথা হয়। আমার ছোট বোনের সেশন ফির জন্য ব্যাংক থেকে ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর থেকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি।

শাহরাস্তি থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল মান্নান জানান, প্রাথমিকভাবে কোন ঘটনায় কাউকে আটক বা সন্দেহ করা হয়নি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহরাস্তি সার্কেল) মো. আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, ঘটনাস্থলের সকল আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত খুনীদের সন্ধান পাবো।

চাঁদপুর জেলা সহকারী পুলিশ সুপার(অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বিবৃতিতে বলেন, প্রাথমিকভাবে মাথায় আঘাত ও মুখে মৌজা পেয়েছি। ছাদের দরজা খোলা ছিলো। ঘটনা তদন্তাধীণ।
ঘটনাস্থল পিবিআই, সিআইডি ও ডিবি সহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাগণ তদন্ত করেছেন।

(ইউ/এসপি/জুলাই ০১, ২০২১)