প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট (কড়িগ্রাম) : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার (২ জুলাই) বিকাল ৩ টায় ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পানি বাড়ার ফলে ধরলা ও তিস্তার ৫০টি চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পাট, ভুট্টা, আউস ধান, আমন ধানের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত নিমর্জ্জিত হয়েছে। ধরলার ভাঙনে সারডোবে বিকল্প বাঁধের অবশিষ্ট্যাংশ ভেঙে পানি ঢুকছে। ফলে ভাটিতে থাকা ১৫টি গ্রাম নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলাকার গ্রামীণ সড়ক ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার গাবুর হেলান, খিতাবখা, ধরলার সারডোব, পাটেশ্বরীসহ কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। সারডোবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত ৩দিনে নদী তীরবর্তী ২০টি পরিবারের বাস্তুভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিননে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মওলা মিয়া নৌকা যোগে বাড়ির মালামাল তুলে বাঁধে নিয়ে যাচ্ছেন। একই অবস্থার সৃষ্টি উকিল মিয়া, আজিজল, আবিয়া, কাছিমনসহ অনেকেই সহায় সম্পদ হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন।

সারডোবের বিকল্প বাঁধের কিছু অংশ রক্ষায় বুধবার সারারাত পাহাড়া বসিয়েছিল গ্রামবাসী। তারা মাটি কেঁটে ও বালির বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করে। বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ড্রেজার বসিয়ে বালু ফেলে বাঁধটি উঁচু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাশাপাশি ফেলা হচ্ছে জিও ও টিউব ব্যাগ। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, যে কোন মূল্যে বিকল্প বাঁধের বাকি অংশ রক্ষা করা হবে।

(পিএস/এসপি/জুলাই ০২, ২০২১)