কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে গন ডাকাতির সংঘটিত হয়েছে। সশস্ত্র ডাকাতদল সাগরে মাছ ধরা শেষে উপকূলে ফেরার পথে মাছ ধরা ট্রলারের জাল, জ্বালানী ও অন্তত তিনশ মন মাছু লুট করে নেয়।

এ সময় ডাকাতদের গুলিতে হানিফ (৫০)এক জেলে আহত হয়েছে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ডাকাতদের মারধরে আহত হয়েছে অন্তত ২০ জেলে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের সোনারচর থেকে কুয়াকাটা সাগর মোহনায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় ডাকাতদল এফবি নীল দরিয়া ট্রলারের রত্তন মাঝি ও জেলে শফিকে অপহরন করে নিয়ে যায়।

ডাকাতদের হামলার শিকার জেলেরা জানান, ১০/১২টি ট্রলারসহ মুক্তিপনের দাবিতে বহু জেলেকে অপহরন করেছে ডাকাতদল। এ ঘটনায় গোটা উপকূলীয় মৎস্য পল্লীগুলোতে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেদের উপকূলে ফিরে আসার অপেক্ষায় তাদের স্বজনরা মহীপুর ও আলীপুরে ভীড় করছে।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, নীলদরিয়া ট্রলারের হানিফকে গুলি করা হয়েছে। একই ট্রলারের মাঝি রত্তন ও জেলে সফিকে অপহরন করা হয়েছে। ৮/১০টি ট্রলারে করে ডাকাতদল এ হামলা ও লুটপাট চালায়।

মহিপুর আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম জানান, এফবি মায়ের দোয়া, এফবি ইসলাম, এফবি সুগন্ধা, এফবি রাকিবুল, এফবি নাসিরসহ অন্তত ১২টি ট্রলার অপহরন করেছে ডাকাতদল। এসব ট্রলারের মাঝি মনির, রফিক, মোতাহার, নিঝুসহ অনেককে অপহরন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ডাকাতের কবলে পড়া ট্রলারগুলো চট্রগ্রাম, ভোলা, পিরোজপুর, হাতিয়া ও স্বন্দিপ এলাকার।

ডাকাতদের কবল থেকে ফিরে আসা ট্রলারের জেলেদের বরাত দিয়ে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, কুয়াকাটা সংলগ্ন একশ কিলোমিটার সাগরবক্ষে ডাকাতের ভয়াবহ তান্ডব, গুলি, লুটপাট ও অপহরণে জেলেরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। লুট করা হয় আহরিত ইলিশ, তেল, জাল ও ট্রলার। কুয়াকাটার জেলে রহমান, সাব্বির জানায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’বার ডাকাতির ঘটনায় জেলেরা সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছে। আল-ইসলাম ট্রলারের মালিক নিজু মাঝি জানান, ডাকাতের ভয়ে প্রতিবছর জেলেদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। মালিকরাও মুক্তিপন দিতে দিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

মহিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আবুল কাশে জানান, তিনিও ডাকাতির ঘটনা শুনেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রলার মালিক কিংবা জেলেরা অধিকাংশ খুলনা অঞ্চলের। মাছ বিক্রির জন্য এখানে আসে। গভীর সাগরবক্ষের ঘটনা তাই এজন্য খুলনা অঞ্চলে অভিযোগ দিতে হবে।

(এমকেআর/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৪)