নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে অসহায় ভুমিহীন ১১৪ পরিবারে চলছে ঈদ উৎসব। ঘরে বসবাসরত অসহায় ভুমিহীনদের এবার নিজ ঠিকানায় আত্মীয়স্বজন নিয়ে পার করছেন তারা ঈদের উৎসব। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী  শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে অনেকেই তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আনন্দে দুচোখে অশ্রু ঝড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে এনায়েতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খাঁপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাসরত নাজরিনা বেগম বলেছেন, আল্লাহ তাওয়ালা যেন তাঁকে দেশের মানুষের সেবা দেয়ার জন্য যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখেন। তবে পশ্চিম খাঁপুরে এ প্রকল্পে ৩৫টি ঘর থাকলেও মাত্র ১৪টি পরিবার বসবাস করতে শুরু করেছেন। ঘর গুলোতে রঙের কাজ শেষ না হওয়ায় বাকি ২১টি পরিবার এসব ঘরে এখন পর্যন্ত প্রবেশ করেনি। সোমবার সরেজমিনে কথা হয় এ প্রকল্পে বসবাসরত আজিজার রহমানসহ অন্যান্যদের সঙ্গে।

তারা জানান, এখানকার পুকুর পাড়ের একটি ঘরের টয়লেটে ফাটল দেখা দেয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী এবং জানালা দরজা তৈরিতে অনিয়ম ধরা পড়ে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে এসে নতুন টয়লেট নির্মাণ এবং জানালা দরজা পরিবর্তন করে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতির মমতাময়ী মানবিক মা উল্লেখ করে সাথী রানী মহন্ত তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আনন্দে দুচোখে অশ্রু ছলছল ভারি কন্ঠে বলেন এ জীবনে তাকে আর পরের জায়গায় ঝুপড়ি ঘরে ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে সন্তানকে নিয়ে জীবন যাপন করতে হবে না। তিনি এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতঞ্জতা ও ধন্যবাদ জানান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী অসহায় ভুমিহীন ও বাস্তুহারা মানুষদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার হিসেবে উপজেলার সদরসহ চাঁন্দাশ, এনায়েতপুর ও চেরাগপুর ইউনিয়নের বাগধানা ভোলাগাড়ীতে নির্মাণকৃত ঘর গুলো প্রদান করা হয়। আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে প্রতিটি পরিবারের জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে রঙিন টিনের ছাউনী দিয়ে দুটি ঘর, একটি এ্যাটাস্ট ব্যাথরুম-টয়লেট, রান্না ঘর ও ঘরের জানালা এবং লোহার দরজা লাগানোর ফলে দৃষ্টি নন্দন হয়ে উঠে এ প্রকল্পের ঘরবাড়ি গুলো।

তবে সচেতন সমাজ মনে করেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাদের মতে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হলে ঘর গুলোর নিচে রড দিয়ে ব্যাজ ঢালাই এবং বিম ঢালাই দেয়া হলে ঘর গুলো অরো টেকসই হতো। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন উপজেলার সদরসহ ৪ ইউনিয়নে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেন। প্রভাবশালীদের দখল মুক্ত এসব খাস জমিতে গত মার্চ মাসের প্রথম দিকে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরবাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন।

এছাড়াও উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাজিলপুর এবং এনায়েতপুর ইউনিয়নের রোদইল, পশ্চিম খাঁপুর ও চেরাগপুরে এ প্রকল্পে বসবাসরত মানুষের সুবিধার্থে ইটের হেয়ারিং রাস্তা নির্মাণ, পুরাতন পাকা রাস্তা সংস্কার, পানি নিস্কাশনে ড্রেন নির্মাণ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, এ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব মোঃ ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের নির্দেশে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ভোদনের সহযোগিতায় এসব ঘরে বসবাসরত অসহায় মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর গুলো মানসম্পন্ন হয়েছে দাবী করে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, এ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

(বিএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০২১)