কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : সেচ্ছায় নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বই নিষিদ্ধ করা হলে এ কে খন্দকারের '১৯৭১: ভেতরে বাইরে' বই কেন নিষিদ্ধ হবে না এমন প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এরপর তিনি কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজে নবীন বরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

হানিফ বলেন, "তসলিমা নাসরিনের বই ছিল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার। আমাদের দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত হানুক আমরা সেটা চাই না। ফলে ওই সময় তসলিমা নাসরিনকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল তার নিরাপত্তার জন্য। আর এ কে খন্দকার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি প্রবীণ মানুষ, বৃদ্ধ মানুষ। বয়সের কারণে তার স্মৃতিভ্রষ্ট হয়েছে। যার ফলে অনেক কিছুই আর মনে আসে না, মনে থাকে না, স্মরণও করতে পারেন না।"

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি এটা একে খন্দকারের বক্তব্য নয়। একে খন্দকারের স্মৃতিভ্রষ্টের কারণে পরিকল্পিতভাবে বই লিখিয়ে কেউ তাকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়েছে। এই বই রচনা করেছে অন্য কেউ।"

তিনি বলেন, "বইতে ঘুরেফিরে শুধু ৭১' সালের রাজনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বইতে কোনো তথ্য, প্রমাণ, যুক্তি কোনো কিছুই নেই। কাল্পনিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে।"

তিনি আরো বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, মু্ক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শুধু পাকিস্তান নয় পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোও ছিল। যুদ্ধের সময় আমাদের বিজয় যখন দ্বারপ্রান্তে তখন জাতিসংঘে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব উঠেছিল। সেসময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এটা ভেটো দিয়েছিল বলে প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। প্রস্তাব যদি অনুমোদিত হত তাহলে আমাদের যুদ্ধ থেমে যেত, দেশ স্বাধীন হতো না।"

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, "পশ্চিমা দেশগুলো আমাদের যুদ্ধের বিরোধী ছিল। ৭১' সালের প্রতিশোধ নিতে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, সেখানেও পশ্চিমা শক্তি মদদ দিয়েছিল। ৭১'র পরাজিত শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দেখতে চাই না। তারা মুক্তিযদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে, আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট করে দেয়ার জন্য এই চক্রান্ত বারবার করে আসছে। এটি তারই একটি ধারবাহিকতার অংশ হতে পারে।"

(ওএস/এটিআর/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৪)