শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলা সদরের পৌর এলাকায় পারিবারিক কলহের কারনে স্ত্রীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে স্বামী। হত্যার পরে স্বামী নিজেই থানায় গিয়ে খুনের খবর জানায় পুলিশকে। পুলিশ স্ত্রী হত্যাকারি ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে।

বুধবার (২৮ জুলাই) শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের উত্তর পালং গ্রামে জেলা কেন্দ্রীয় বাসস্টান্ড সংলগ্ন শামীম তালুকদারের ভাড়া বাড়িতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ভোর আনুমানিক ৫ টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা মৌ এর মাথায় ইট দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে স্বামী আরিফ মুন্সী। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় স্ত্রী মৌ। এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর পালং মডেল থানায় মৌ"র ভাই রাসেল হাওলাদার বাদী একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের বালিহাটির মৃত চাঁন মিয়া মুন্সীর ছেলে আরিফ মুন্সীর(৪০) সাথে শরীয়তপুরের উত্তর পালং গ্রামের আবুল কালাম হাওলাদারের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা মৌর(২৮) ২০০৭ সালে বিয়ে হয়। আরিফ-মৌ দম্পত্তির আয়েশা আক্তার ঈশা(১৩) ও ইয়াকুব মুন্সী সোহান(৮) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই আরিফ মুন্সি যৌতুকের জন্য মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন ও চাপ দিতে থাকে মৌকে। সম্প্রতি ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আরিফ। মৌ'র পরিবার তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মঙ্গলবার রাতভর কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। ভোর ৫ টার দিকে আরিফ মুন্সী তার স্ত্রী মৌর মাথায় ইট দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করলে মৌ মারা যায়।

মৌ'র সন্তানেরা চিৎকার করলে বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হয়। পরে পালং মডেল থানায় গিয়ে ঘাতক আরিফ খবর দেয় শামীম তালুকদারের ভাড়া বাড়িতে একটি খুন হয়েছে। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন এবং খুনি আরিফকে গ্রেফতার করেছেন।

এ বিষয়ে নিহতের ভাই রাসেল হাওলাদার বলেন, বিয়ের পর থেকেই খুনি আরিফ আমার বোনকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারপিট করতো। মাদক সেবন করে আমার বোনের সন্তানদেরও মারপিট করতো। আজ ভোরে আমার বোনকে হত্যা করে তার দুটি নিষ্পাপ শিশুকে এতিম করেছে। আমরা এই ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করছি।

শরীয়তপুর সদর পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আখতার হোসেন বলেন, খুন করার পর আসামী নিজেই এসে জানিয়েছে যে ওই এলাকায় একটি খুন হয়েছে। থানায় তথ্য দিয়ে সে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলে তাকে পুলিশ সন্দেহ করে। পরে তাকে গ্রেফতার করে থানায় আটকে রাখা হয়। এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে আসামীর সর্বোচ্চ বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।

(কেএনআই/এসপি/জুলাই ২৮, ২০২১)