টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র(আইসিইউ) চালু করা হয়নি। ফলে জেলার ১২টি উপজেলার করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীরা আইসিইউ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই হাসপাতালের ৫০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটের ১০ শয্যার আইসিইউতে অগ্নিকা- সংঘটিত হয়। এ ঘটনার পর পরই তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহানা নাসরিনকে প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, আইসিইউতে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা মেশিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ও নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার না করার কারণে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। প্রতিবেদনে আটটি সুপারিশও করা হয়।

অগ্নিকাণ্ডের ১৬দিন অতিবাহিত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ সেবা চালু করতে পারেনি। ফলে আইসিইউ সেবা ছাড়াই জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। আইসিইউ চালু না হওয়ায় মুমূর্ষু করোনা রোগীদের ঢাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঢাকায় আইসিইউ ব্যয় বহন করতে অনেক রোগীর পরিবার হিমশিম খাচ্ছে।
একাধিক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আইসিইউ সেবা বন্ধ থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের অন্যত্র রেফার্ড করা হচ্ছে। হাসপাতালে আইসিইউ সেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের সুচিকিৎসা হচ্ছেনা।

করোনা রোগীর স্বজন সোলাইমান মিয়া জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ চালু না হওয়ায় তার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর(রেফার্ড) করা হয়েছে। ঢাকার চিকিৎসা ব্যয় চালানো তাদের জন্য কষ্টের তবুও শেষ চেষ্টাটুকু চালাচ্ছেন। আসাদুল ইসলামের অভিযোগও প্রায় একই।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শফিকুল ইসলাম সজিব জানান, আইসিইউ এখনও পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। আইসিইউ প্রস্তুতের কাজ অনেকটা শেষের দিকে। খুব দ্রুত আইসিইউ প্রস্তুত করা হলেই সেবা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, রোববার(১ আগস্ট) সকাল থেকে সীমিত আকারে আইসিইউ চালু করা হয়েছে। তবে এসি চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। দ্রুতই পুরোপুরিভাবে আইসিইউ চালু করা সম্ভব হবে।

প্রকাশ, গত ১৫ জুলাই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওইদিন ইউনিটের ১০টি শয্যায় থাকা রোগীদের তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালের বাইরে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা হয়। অক্সিজেন সাপোর্ট না পেয়ে অনেক রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। এমতাবস্থায় চিকিৎসকরা একাধিক রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর(রেফার্ড) করেন। ওইদিন হাসপাতালের বাইরে থাকা একাধিক রোগী অক্সিজেন সাপোর্ট না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

(আরকেপি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২১)