ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : তার নাম আশিকুর রহমান হৃদয়। তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১। তবে স্থানীয়রা তাকে মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের লিডার হিসেবেই জানে। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকায়। আসন্ন জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন তিনি। তার বাবার নাম রফিক মিয়া (রফিকুল ইসলাম) ও মায়ের নাম মর্জিনা বেগম ওরফে মনা বেগম।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, মাদক ব্যবসা তার পারিবারিক ইতিহাস। অতীতে তার বাবা-মায়ের নামেও মাদকের মামলা ছিলো। হৃদয়ের নামেও মারামরির মামলা ছিলো।

অভিযোগ আছে, তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকার একটি কিশোর গ্যাং। গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে হৃদয় মাদক ব্যাবসা চালাচ্ছেন। কিশোর গ্যাং টিমের ভয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। গত ২৪ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার হওয়া ১৮ ছিনতাইকারীর মধ্যে মানিক মিয়া নামে এক ছিনতাইকারীকেও আটক করে পুলিশ। মানিক হৃদয়ের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত।

হৃদয় তার নিজের গোষ্ঠী প্রভাব এবং কতিপয় রাজনৈক বড় ভাইদের ছত্রছায়ায় অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। হৃদয় বাহিনীর ভয়ে অজানা আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা। হৃদয়ের ব্যপারে এলাকার অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চান না। হৃদয় যেত এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম।

এ ব্যপারে অভিয্ক্তু আশিকুর রহমান হৃদয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বাবা মায়ের বিরুদ্ধে মাদকের যে মামলাগুলো ছিলো সেগুলো ষড়যন্ত্রমূলক। এগুলোর সাথে তারা কখনো জড়িত ছিলো না। তবে বর্তমানে তার মা সমিতির ব্যবসা করেন। যার দ্বারা ভালো টাকা ইনকাম হচ্ছে।

হৃদয় নিজের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে কিশোর গ্যাংয়ের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “রাজনীতি করতে হলে কিছু পোলাপান লাগে”।

এ বিষয়ে সংবাদ না করার জন্য হৃদয় এ প্রতিবেদককে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাবও করেন।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার হোসেন বলেন, ‘হৃদয় একজন মাদক ব্যবসায়ী। এলাকায় বখাটে ও উশৃঙ্খল যুবক হিসেবে সে পরিচিত। ইতোপূর্বে তার বাবা-মা মাদক ব্যবসা করতেন। গত কিছুদিন আগে মধ্যপাড়া এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মালেক সাহেব ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আমরা একটি মিটিং করেছিলাম মাদকের বিরুদ্ধে। সেখানে সবাই মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমরা এলাকা থেকে মাদক নির্মূলের জন্য যা করা দরকার তাই করবো।

এ ব্যপারে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ শোভনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৬, ২০২১)