শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : পুনরায় দিনাজপুর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেলেন মো. আবু বকর সিদ্দিক। তিনি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শেষে পুনরায় দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তার এই কাকতালীয় ভাগ্যে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘একেই বলে ভাগ্য।বোর্ডে চাকরি শেষে আবারও পুনরায় একই স্থলে!’

অন্যদিকে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ,বিশিষ্ট কবি ও গবেষক ড. একেএম মাসুদুল হক। তিনি দিনাজপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর যোগদানের বিষয়টি অনেকে আশা ব্যঞ্জক হিসেবে দেখছেন। একজন গুণি মানুষ হিসেবে অনেক খ্যাতি রয়েছে, ড. একেএম মাসুদুল হকের।

দিনাজপুর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে মো. আবু বকর সিদ্দিক এবং দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে ড.একেএম মাসুদুল হক নিয়োগের বিষয়টি ৮ আগস্ট'২০২১ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালের ১০ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনাজপুর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, মো. আবু বকর সিদ্দিক।তারও আগে আবু বকর সিদ্দিক একই কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ও উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ডিসেম্বর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবু বকর সিদ্দিক। নিয়ম অনুযায়ী ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর তাঁর চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ শেষ হবার কথা। তবে, করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ৮আগস্ট পর্যন্ত পূর্ন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

এবিষয়ে দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তোফাজ্জুর রহমান বলেন,কিছু আনুষ্ঠানিকতা, দাপ্তরিক কাজ কর্ম শেষ করে চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক মহোদয় তাঁর পুরনো কর্মস্থলে যোগ দিবেন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান না থাকলে সাধারণত বোর্ড সচিব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু গত মে মাসে বোর্ড সচিব আমিনুল ইসলাম সরকারও অবসরে যান। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পাশাপাশি বর্তমানে সচিবের দায়িত্বও পালন করছি। আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রোববার বিকেলে প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। অফিসের কিছু কাজকর্ম গুছিয়ে নিয়ম অনুযায়ী জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে। তবে যেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ড সচিব অবসরে গেছেন, সেক্ষেত্রে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে সবকিছু বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে ড. এ কে এম মাসুদুল হক জানান, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হতে পারা অত্যন্ত গৌরবের। সঠিকভাবে যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সে জন্য সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান , ড. মাসুদুলের হক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হায়াত মামুদের অধীনে নান্দনিকতায় পিএইচডি আছে। তিনি একজন সমসাময়িক বাঙালি কবি, ছোটগল্পকার, অনুবাদক এবং গবেষক। প্রকাশিত রচনার মধ্যে রয়েছে ছোটগল্প; তামাকবাড়ি (১৯৯৯), কবিতা ধোনিময় পালোক (২০০০), ধাধশীল ছায়া যার অনুবাদিত সংস্করণ হল শ্যাডো অফ ইলিউশন (২০০৫), এবং জন্মানদার স্বপ্ন, যার অনুবাদিত সংস্করণ ব্লাইন্ড ম্যানস ড্রিম (২০১০), কেলি জে কোপল্যান্ড দ্বারা অনুবাদিত) । ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন T.S. এলিয়টের কবিতা ফোর কোয়ার্টেটস (২০১২) এবং অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতা হাউল (২০১৮)। ১৯৯০ -এর দশকের শেষের দিকে, তিনি বাংলা একাডেমিতে একটি গবেষণা ফেলোশিপের অধীনে তিন বছর কাজ করেন, যা তার দুটি গবেষণা বই প্রকাশ করেছে। তার কবিতা চীনা, রোমানিয়ান, ম্যান্ডারিন, আজারবাইজানিজ, তুর্কি, নেপালি এবং স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। বিশিষ্ট এবং গুণীজন হিসেবে তাঁর ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে।

(এস/এসপি/আগস্ট ১০, ২০২১)