জামালপুর প্রতিনিধি : অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওয়াজেদা পারভীন নামে এক প্রধান শিক্ষিকার অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন ওই বিদ্যালয়ের কর্মচারী ও এলাকার লোকজন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান সামাদ, সিনিয়র শিক্ষক মতিউর রহমান, সহকারী শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আতাউল গনি ওসমানি, লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার পপি, ট্রেড ইন্সট্রাক্টর হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন নিয়োগের পর থেকেই নানা অনিয়ম করে আসছেন। তিনি উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সহ-সভাপতি হওয়ায় দাপট দেখিয়ে অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারিদের সাথে প্রায়ই অসদাচরণ করেন। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ২০১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রায় ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ১২ টাকা ১ পয়সা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।

বক্তারা আরো বলেন, চলতি বছরের ৯ এপ্রিল বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরদিন ১০ এপ্রিল থেকে প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীনকে ২০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শাহজাদা স্বাক্ষরিত পত্রে একইসাথে তাকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে অর্থ তছরুপের ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যস্থতায় পুনরায় তাকে বিদ্যালয়ে যোগদান করানো হয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষিকার স্থায়ী শাস্তি না হওয়ার ক্ষোভে প্রতিষ্ঠানটির সব শিক্ষক-কর্মচারি ও এলাকাবাসী মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধন চলাকালে বিদ্যালয়ের প্রতিবেশী নিয়ামত আলী ভেন্ডার প্রধান শিক্ষিকার পক্ষ নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারিদের উপর চড়াও ও তাদের লাঞ্ছিত করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের লোহার একটি বড় গেট প্রধান শিক্ষিকা নিয়ামত আলীকে বিনামূল্যে দিয়ে দেন এবং উভয়ের মধ্যে গোপন যোগসাজশ রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারি স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আমি অসুস্থ মানুষ, আমার অনুপস্থিতিতে মানববন্ধনের বিষয়টি দুঃখজনক।' অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলেও তিনি দাবি করেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শাহজাদা বলেন, 'মানববন্ধনের বিষয়টি আমি অবগত নই। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিলো, তবে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তাকে স্বপদে বহাল করা হয়।'

(আরআর/এসপি/আগস্ট ১২, ২০২১)