রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ডাকাতির চেষ্টার মামলায় রিমাণ্ডে নেওয়া দু’ জুয়াড়ি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদেরকে সাতক্ষীরার তালা থানার একটি ডাকাতির চেষ্টার মামলায় দু’দিনের  রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের খাস কামরায় হাজির করানো হয়।

আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন পাটকেলঘাটা ওভারব্রীজের পার্শ্ববর্তী জয়নাল মোড়লের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৩) ও একই এলাকার সাঈদুল ইসলামের ছেলে কবীর গাজী ওরফে কালু (৫০)।

তালা থানার উপপরিদর্শক প্রীতিশ রায় জানান, গত ৭ আগষ্ট ভোরে উপজেলার জাতপুর বাজারের পাশ থেকে একটি মোটর সাইকেলসহ পাটকেলঘাটার শরিফুল ইসলাম, কবীর গাজী ওরফে কালু গাজী, তেলকুপি গ্রামের বাবু সরদারের ছেলে আতাউর সরদার ও সদর উপজেলার ধুলিহরের আকের আলীর ছেলে আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়। তারা রাস্তার উপর গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টা করছিল। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক চন্দন কুমার মণ্ডল বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতির চেষ্টা মামলা(জিআর-৭৮, তালা) করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ডাকাতদলের ওই চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানান।

শুনানী শেষে শরিফুল ও কালুকে দু’দিন করে রিমাণ্ড মঞ্জুর করা হয়। অপর দু’ জনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। মঙ্গলবার শরিফুল ও কালুকে কারাগার থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতির চেষ্টার কথা স্বীকার করে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজী হয়। সে অনুযায়ি তাদেরকে বৃহষ্পতিবার বিকেলে জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের খাস কামরায় হাজির করানো হয়। তবে তারা বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করে।

এ ব্যাপারে শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি এক সময় মাদকের ব্যবসা করতেন। তার বিরুদ্ধে পাটকেলঘাটা থানায় একটি মাদকের মামলা আছে। এক বছর যাবৎ তিনি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

কবীর গাজী ওরফে কালু জানান, তিনি একটি ইটভাটায় কাজ করেন। বর্তমানে বর্ষা থাকায় ভ্যান চালান। তার বিরুদ্ধে পাটকেলঘাটা থানায় মামলা আছে।

শরিফুল ও কালু জানান, তারা দু’জনসহ আতাউর ও আব্দুর রহমান একটি লাল রং এর প্লাটিনা মোটর সাইকেলে গত ৬ আগষ্ট রাতে তালা উপজেলার মহান্দি গ্রামের একটি মাছের ঘেরে জুয়া (তাস) খেলতে যান। জুয়া খেলা শেষে তারা ৭ আগষ্ট ভোর সাড়ে চারটার দিকে মহান্দি এলাকায় তিন রাস্তার মোড়ে আসা মাত্র পুলিশ তাদের গাড়ি থামায়।

জিজ্ঞাসাবাদে সব কিছু বলার পরও তাদের চারজনের বিরুদ্ধে জাতপুর বাজারের পাশে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতির চেষ্টার মামলা দেওয়া হয়। রিমাণ্ডে নিয়ে তাদের দু’জনকে মারপিট করে হুমকি দিয়ে ডাকাতির চেষ্টার কথা স্বীকার করানোর চেষ্টা করা হয়। তাদের বক্তব্য মোবাইলে ভিডিও করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে হাজির করানো হলে তারা বিচারকের কাছে ঘটনা খুলে বলেন। ফলে বিচারক তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ না করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তবে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শরিফুল ও কালুকে মারপিট করে স্বীকারোক্তি আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, তারা চালাকি করে বিচারকের কাছে মিথ্যা কথা বলেছে।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২১)