বগুড়া প্রতিনিধি : সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট ইউকে-এর উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা কমরেড পান্না লাল সোম-এর স্মরণে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জন্য খাবার পানি ও কৃষিকাজের সুবিধার্থে চারটি টিউবওয়েল সেট উপহার প্রদান করা হয়। এছাড়াও আদিবাসী স্কুলের শিক্ষিকা থ্রিসিলা মরমুর সদ্যজাত শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় শিশুখাদ্য উপহার দেয়া হয়। উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সেবা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জননেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন।


রবিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১১টায় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা সংলগ্ন সেন্সবেরী সুপার স্টোর প্রাঙ্গণে করোনা স্বাস্থ্য বিধি মেনে সংক্ষিপ্ত পরিসরে উপহার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। উপহার প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জননেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন বলেন, "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ সংগ্রামী মানুষের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতির সোপানে পৌঁছাতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। উন্নতির জন্য পরিশ্রমের বিকল্প নেই। সাঁওতাল সম্প্রদায় আদিকাল হতেই নারী-পুরুষ সবাই পরিশ্রমী। কৃষিসহ সার্বিক কাজে তাদের নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। তাদের একটি বড় গুণ হলো- শত কষ্টেও তারা হাত পাতে না বা ভিক্ষা করেনা। নিঃস্বার্থ বন্ধু ছাড়া কারো সহযোগিতা তারা গ্রহণ করে না। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের এই বৈশিষ্ট্য সবার জন্য শিক্ষণীয়। সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কল্যাণে কাজ করার জন্য। উপহার দেয়া টিউবওয়েল সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কৃষি ও খাবার পানির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সেইসঙ্গে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমরেড পান্না লাল সোমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং অন্তরের অন্তস্থল হতে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।"

উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- জাহানারা ও লুৎফর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাসুদার রহমান মাসুদ, সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট ইউকে-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও দৈনিক বাংলা ৭১ পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি রাশেদ এবং সাঁওতাল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি আদিবাসী স্কুল শিক্ষিকা থ্রিসিলা মরমু, হেমব্রম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯৬২ সালে সাঁওতাল ও বাঙালিদের ১,৮৪০.৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গ করে ওইসব জমি লিজ দিলে তাতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ শুরু হয়। ফলে গত ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙালি অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড় বসতি স্থাপন করে এবং কৃষি কাজ শুরু করে। জীবনের বিনিময়ে সেই থেকে তাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলছে।

(বিকেএস/এএস/আগস্ট ২২, ২০২১)