রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মাছ চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মিলন মিয়া (৩০)। মিলন উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। কঠোর পরিশ্রমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন আদর্শ মৎস্য চাষী হিসেবে। 

সরেজমিন পরিদর্শনে মাছ চাষী মিলন মিয়ার জানান, ২০১১ সালে শুকনো মৌসুমে করতোয়া নদীর জেগে ওঠা তীরের গর্তে অল্প পানিতে দুই লিটার মাছের ডিম-রেণু ফুটিয়ে পোনা মাছ বিক্রি শুরু করি। সেসময় আমি ৫০ হাজার টাকা মুনাফা পাই। ২০১৩ সালে ২০ হাজার টাকা বাৎসরিক ভাড়ায় ২৫ শতক একটি পুকুর লীজ নেই। সেখানে ছয় হাজার টাকায় দুই লিটার কই ও শিং মাছের রেণু ফেলি। সাত মাসে মাছের খাদ্য ও অষুধ বাবদ খরচ হয় ৩ লাখ টাকা। মাছ বিক্রি হয় ৭ লাখ টাকার। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

বর্তমানে ৪ টি পুকুরে মাছ চাষ করছি। যার বাৎসরিক ভাড়া ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩টি পঞ্চাশ শতক করে এবং ০১টি ষাট শতক জলমহল বিশিষ্ট। সেখানে তেলাপিয়া ৬ হাজার, পাবদা ৩৩ হাজার এবং ৮ হাজার পিস গোলসা (টেংরা) ছাড়া হয়েছে। প্রতিপিস তেলাপিয়া ১ টাকা ৬০ পয়সা, পাবদা প্রতি পিস ১ টাকা এবং গোলসা প্রতিপিস ১ টাকা পঞ্চাশ পয়সা দরে পোনা মাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই মাছ গুলো বাজারজাত পর্যন্ত খাবার, ঔষধ ও সেচ বাবদ খরচ হবে আনুমানিক সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এবং ৭ থেকে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা করছেন মাছ চাষী মিলন মিয়া।

তিনি আরো জানান, উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের ঠুটিয়াপাকুর এলাকার মৎস্য চাষী ফলার মিয়াকে দেখে তিনি এ খাতে উদ্বুদ্ধ হন। শুরুর দিকে তিনি তাকে উৎসাহসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।

হোসেনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌফিকুল আমিন মন্ডল টিটু জানান, মিলন একজন সফল মাছ চাষী। তার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে হোসেনপুর ইউনিয়নের খাসবাড়ী গ্রামে সিদ্দিক মিয়া, কিশামত চেরেঙ্গা গ্রামের মাহাবুব ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের আতিকুর রহমান মাছ চাষ শুরু করেছেন।

উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার জানান, মিলন মিয়া উপজেলার একজন আদর্শ মৎস্য চাষী। তার প্রজেক্ট পরিদর্শনসহ সম্ভব্য প্রয়োজনীয় সবধরণের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

(আর/এসপি/আগস্ট ২৩, ২০২১)