শেখ সাদ বীন শরীফ, নড়াইল : জেলার কালিয়া জোকা গ্রামে ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রউফ মোল্লা নামে (৬৫) এক অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষককে আটক করেছে কালিয়া থানা পুলিশ।

শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুটির স্বজনরা জানান, গত ১৪ আগষ্ট দুপুরে শিশুটি তাদের বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যাচ্ছিল। এ সময় তার প্রতিবেশী দাদা রউফ মোল্লা পিঠা খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিজের ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে কাউকে জানালে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় শিশুটিকে। পরে শিশুটি বাড়ি ফিরলেও ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি।

এক সময় রক্তক্ষরণ হতে দেখে স্বজনরা কিছু না বুঝে চিকিৎসার জন্য তাকে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে উচ্চতর চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। খুলনা নেয়ার পর স্বজনরা চিকিৎসকের বলা মতে শিশুটির ধর্ষিত হবার বিষয় জানতে পারে। ১৪ থেকে ১৭ আগষ্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে স্বজনরা শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেও পুতুল খেলার বয়স না পেরোতেই জীবনে ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত এ ঘটনার আকস্মিকতায় অবুঝ শিশুটি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

ফলে বার বার চেষ্টা করেও এ ঘটনায় কে জড়িত তা জানা যায় নি। এভাবে কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর শিশুটি মুখ খুললে স্বজনরা জানতে পারে শিশুটির প্রতিবেশী দাদা রউফ মোল্লা ঘটনার সাথে জড়িত।

এর পরই মামলা করতে বাধা দেয়াসহ রউফ মোল্লার প্রভাবশালী পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু হয় নানা ধরনের হুমকি। অব্যাহত এ ভয়ভীতি উপেক্ষা করে কোলের সন্তানের উপর ঘটে যাওয়া পৈশাচিকতার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে স্বজনরা কালিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কালিয়া থানা পুলিশ অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রউফ মোল্লাকে আটক করে।

প্রতিবেশী নাজিরউদ্দীন নামে এক ব্যক্তি জানান, ইতি পূর্বেও রউফ মোল্লা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে সেই ভূক্তভোগী পরিবারকে ভয়ভীতি দিয়ে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে মিমাংসার নামে ঘটনা ধামাচাপা দেয় বলে জানা গেছে।

কালিয়া থানার ওসি শেখ কনি মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে তৎক্ষনাৎ অভিযুক্ত রউফ মোল্লাকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

(এসবিএস/এএস/আগস্ট ২৫, ২০২১)