হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের গেইটের সামনে সাংবাদিকদের মারধর করে মোটরসাইকেল, ক্যামেরা এবং মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত ১৬ আগস্ট সোমবার হবিগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ ইয়াসিন আরাফাত এ আদেশ দেন।

জানা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের গেইটের সামনে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার তথ্য ও সংবাদ সংগ্রহের সময় দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সাংবাদিকদের মারধর করে মোটরসাইকেল, ক্যামেরা এবং মোবাইল ছিনতাই করে একদল দুর্বৃত্ত।

এ ঘটনায় পরদিন ওই পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক তারেক হাবিব বাদী হয়ে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত ৭ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে।

এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের মৃত কিম্মত আলীর পুত্র মহিবুর রহমান মাহি (৩৫), শহরতলীর বড় বহুলা গ্রামের বিএনপি নেতা সালেহ মিয়ার পুত্র যুবলীগ নেতা সাব্বির আহমেদ রনি (৩৫), শহরের পুরাণ মুন্সেফী এলাকার প্রভাষ আর্চায্যের পুত্র কৌশিক আচার্য্য পায়েল (৩২), যশেরআব্দা এলাকার সুনীল দেবনাথের পুত্র শৈকত দেবনাথ (২৮) সহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন। এর আগে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের জনৈক সোনা মিয়ার বাড়ি থেকে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ হবিগঞ্জ। এ ঘটনায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় সোনা মিয়া।

আদালত সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চুরি, মারধর, ছিনতাই এবং গুরুতর অপরাধের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা থাকায় গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী স্ব-স্ব থানায় গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রেরণ করা হবে। আসামীদের গ্রেফতার করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আদালত।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি জানান, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আদালতের কোন নির্দেশনা থাকলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি। পরে সাংবাদিক পরিচয়ে তাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দেয়া হয়।

মামলার বাদী তারেক হাবিব জানান, আদালতে মামলা দায়ের করায় ইতোমধ্যে তাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ তার উপর একাধিকবার হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তার ছবি ও নাম ব্যবহার করে ফেইক আইডি তৈরি করে হয়রানির চেষ্টা করে আসছে। তিনি জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।

(টিএইচ/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০২১)