মাজহারুল হক লিপু, মাগুরা : স্বামীরা হত্যা মামলায় জেল হাজতে। নিরাপত্তাহীনতায় বাড়িঘর ছেড়েছে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের লোকজন। এই সুযোগে আসামীদের ঘরবাড়ি গায়েব করে দেওয়া হচ্ছে। এমন ঘটনা মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামে।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৯জুন জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হন মাহফুজার মোল্যা। এরপর মামলা হয়। পুলিশ আসামীদের কয়েকজনকে আটক করে। বাকি পলাতক আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আসামীদের বাড়িতে পুরুষশুণ্য হয়ে পড়লে ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যান মহিলারা। এই সুযোগ নিয়ে তাদের বাড়িঘরে ভাংচুর করা হচ্ছে। তাদের ঘরগুলো গায়েব করে দেওয়া হচ্ছে।

মামলার আসামী কদম আলীর স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, আমার বাড়ির চার পুতায় ৪টি পাকা ও হাফ পাকা ঘর ছিল। বাদির লোকজন এই হত্যার পর বিভিন্ন সময়ে আমার বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করে। তারা আমার প্রায় ১৭ লাখ টাকার বেশি চুরি ও ক্ষতি করেছে। এ নিয়ে আমি ১৮জুলাই মোকাম মাগুরার বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা করি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হত্যা মামলার একজন আসামী নায়েব আলীর স্ত্রী সেলিনা বেগমও একই আদালতে একটি ভাংচুর মামলা করেন। মামলার ৩৮ দিনের মাথায় পারভীন বেগমের এখন ঘর বলতে কিছুই নেই। সব গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সবুজ মোল্যারও সবগুলো ঘর গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে শুধু ঘরের মাটির ডোয়া ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি।

স্থানীয় সালেহা বেগম নামে এক নারী বলেন, কিছু অসৎ লোক রাত গভীর হলেই আসামীদের বাড়িতে এসে ভাংচুর চালায়।

জামিনে বের হয়ে আসা হত্যা মামলার আসামী হোসেন মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিনে মুজিব মোল্যা, নাজির মোল্যা, আউয়াল মোল্যা, আকবর মোল্যাসহ মামলার কয়েকজন আসামীর বাড়িতে ভাংচুর করা হয়েছে। প্রায়ই ভাংচুর করা হচ্ছে। প্রতিপক্ষের লোকজন সবার বাড়িঘর গায়েব করে দিচ্ছে। তারা ভিটে থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে।

মহম্মদপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, নতুন করে ভাংচুরের কোন সত্যতা পাইনি। পুরনো ভাংচুরের মামলা তদন্তনাধিন আছে। এছাড়া কয়েকটি আসামির পরিবারকে তাদের বাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি অভিযোগ পাই তবে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৯জুন জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হন মাহফুজার মোল্যা। এরপর মাহফুজার মোল্যার বাবা আফসার মোল্যা বাদি হয়ে গত ৩০ জুন ২১ জনকে আসামী করে মহম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ১৭ জন আসামী এখন জেলে আছে। ১ জন জামিন পেয়েছেন। পলাতক রয়েছে ৩জন আসামী।

(এম/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২১)