মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শালিখা উপজেলার শরুশুনা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেয়ান মোঃ রিয়াজ হোসেন এর বিরুদ্ধে এহসান সোসাইটি’ নামের এক ভূঁইফোড় লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে শালিখা প্রেসক্লাবে অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার ভুক্তভুগি অর্ধ শতাধিক গ্রাহকরা।

জানা যায়, গত ৬/৭ বছর আগে মাগুরা সদরে ও শালিখা উপজেলায় অফিস খুলে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো এহসান সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অর্ধ শতাধিক গ্রাহকের আমানতকৃত প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ডিপিএসের মেয়াদ পূর্তির পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ সটকে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। এর পর থেকে কার্যালয়টি নিয়মিত বন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়। ফলে আমানত হারানোর ভয়ে এসব গ্রাহক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে শালিখা প্রেসক্লাবে অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, আমানতকারীদের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হত দরিদ্র। প্রতিষ্ঠানটির শালিখা শাখার ফিল্ডকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোঃ রিয়াজ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা । মোঃ রিয়াজ হোসেন স্থানীয় শরুশুনা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী লা ইব্রেয়ান। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মোঃ রিয়াজ হোসেনকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও আমানতকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে শরুশুনা শালিখা বাজার সড়কের পাশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে টাকা ফেরতের দাবিতে ফিল্ডকর্মী রিয়াজ হোসেনের বাড়ি ঘেরাও করে ভুক্তভুগিরা।

বিষয়টি নিয়ে এহসান সোসাইটির গ্রাহক মোঃ মাজেদুল, রওসোনয়ারা, আসাদ মোলা, চায়না, ফরিদা, মাজেদা, শাবানা, বাশুদেব, জয়নাল, সিপ্রা বিশ্বাসসহ অর্ধশতাধিক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, ফিল্ডকর্মী ‘মোঃ রিয়াজ হোসেন গত ৮ বছর আগে এহসান সোসাইটি শালিখা শাখা চালু করেন। এটি একটি ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ও সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠান দাবি করে ডিপিএস খোলার জন্য তিনি স্থানীয়দের বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এবং বলেছিলেন এই সংস্থায় কোন প্রকার টাকা মার গেলে আমি বুঝে দেব। প্রয়োজনে আমার জমি বিক্রি করে আপনাদের টাকা ফেরত দেব। আমি এই সংস্থার ফিল্ডকর্মী হিসাবে চাকুরী করছি। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাদের আমানতের সব টাকা সংহস্থার মাধ্যমে যোগসাজশে আত্মসাত করে ওই সব টাকা শরুশুনা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘুষ দিয়ে সহকারী লাইব্রিয়ান পদে চাকুরী করছেন। এখন বলছেন প্রতিষ্ঠান হারিয়ে গেছে, পালিয়েগেছ। আমি প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা করেছি মর্মে নাটক সাজাচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে শরুশুনা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ নাজমুন নাহারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিতে নারাজ। পরে তিনি বলেন, রিয়াজ হোসেন বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থগারের চাকুরী করছেন। আমি শুধু এইটুকু জানি। তিনি এহসান সোসাইটি নামে কোন সংস্থায় চাকুরী করতেন কি না আমি জানি না। আমি এ বিষয়ে আপনাদের কিছু বলতে পারবোনা।

তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ রিয়াজ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি এহসান সোসাইটিতে ফিল্ডকর্মী পদে চাকুরী থাকাকালিন অবস্থায় ৫০ থেকে ৫৫ জন গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম। এসব টাকা আমি এহসান সোসাইটিতে জমা দিয়েছি। এখন সংস্থাটি পালিয়েছে। আমরা কিছু কর্মকর্তারা মিলে এহসান সোসাইটির নামে মামলা করেছি। মামলাই জয়ী হলে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেব।

এ ব্যাপারে শালিখা থানার ওসি মোঃ হোসেন আল মাহবুব জানান বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ডিসি/এসপি/আগস্ট ৩১, ২০২১)