রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।  ব্রহ্মপুত্র ও ধরলানদীর পানি কয়েক দিন ধরে  বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার  বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে করে  নদ-নদী অববাহিকার চর, দ্বীপচরসহ নীচু এলাকার ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগের মুখে রয়েছে। এসব এলাকার রাস্তা ঘাট পানির নীচে তলিয়ে থাকায় যাতায়াতে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

এদিকে চলমান বন্যায় জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪শ ৭ হেক্টর জমির রোপা আমান ও ২শ ৭০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত, ১শ হেক্টর জমির বীজতলা কয়েক দিন ধরে পানিতে তলিয়ে থাকায় বেশিরভাগ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা গ্রামের জমিলা বেগম জানান, প্রায় ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির চারিদিকে পানিতে তলিয়ে আছে। নৌকা ছাড়া বাইরে বেড়ানোর উপায় নেই। ঠিকমত বাজার সদাই করতে পারছি না। সেচ দিয়ে আমন লাগিয়েছিলাম সে আমনও পানির নীচে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, আমার ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার প্রায় ৩'শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রশাসন থেকে ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা বিতরণ প্রক্রিয়া চলছে।

উলিপুর উপজেলার বেগমগ›জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৫শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। ঘরের ভিতর পানি না উঠলেও চারিদিক তলিয়ে আছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আজ রাতের মধ্যে ঘর-বাড়ির ভিতরে পানি ঢুকে পড়বে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশরী আরিফুল ইসলাম জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি আরো কিছুটা বাড়তে পারে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যাকবলিতদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে।

(পিএস/এসপি/আগস্ট ৩১, ২০২১)