রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি এখনো হু-হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। চারদিকে পানি ওঠায়  দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বয়স্ক ও নারীদের জন্য লেট্রিন সমস্যা প্রকট হয়েছে। তৃনমূলভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। নিম্নবৃত্তরা এক বেলা খেয়ে আরেক বেলা থাকছে অনাহারে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ব্রীজ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ব্রহ্মপূত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নীচে অবস্থান করছে।
ধরলা ও ব্রহ্মপূত্র নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অববাহিকায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিসার আব্দুল হাই সরকার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৪শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।

উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।

অপরদিকে উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু জানান, উলিপুরে ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবিন্দ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যার ফলে জেলায় প্রায় ২৮হাজার হেক্টর রোপা আমন, শাকসবজি ও বীজতলা পানির নীচে রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বন্যা দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরসহ তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও ভ্রাম্যমান লেট্রিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার থেকে উপ-বরাদ্ধকৃত ২৮০ মে.টন চাল ও ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দুর্গত এলাকায় বিতরণ শুরু হয়েছে।

(পিএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১)