ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টায় বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হলেও সকাল নয়টার পর থেকে ৩৫সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অথচ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় এই পয়েন্টে তিস্তার পানি।

আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ।তিস্তা বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সুত্র জানায়, উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা নদীতে। এ কারণে দশটি ইউনিয়নের প্রায় দশ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে চার দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে জনমনে আতংক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ভাঙ্গণের মুখে পড়া ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ির চরের দুই নম্বর স্পারটি ও খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের পুর্ব দোহল পাড়া বেরিবাঁধটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, হঠাৎ করে আবারো পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত এক হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চর এলাকার মানুষরা পানি হয়ে পড়েছেন।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, পানি বন্দি হয়ে পড়ায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না মানুষরা। তারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।পানি কমে না আসলে বিপদে পড়বেন তারা।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ভেন্ডাবাড়ি চরের দুই নম্বর স্পারটির দেড়শো মিটার ভেঙ্গে যায়।ফলে প্রায় দুইশো পরিবারের ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। আবারো পানি বৃদ্ধি পেয়েছে শংকায় রয়েছে অনেক পরিবারের মানুষ।বাঁধটি রক্ষা করা না গেলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিতে পারে।

খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের পুর্ব দোহল পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ জানান, এলাকার বেরিবাঁধটির একশো মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবার হাজারও হেক্টর আবাদি জমি। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তায়। এলাকা পর্যবেক্ষণে রেখেছি আমরা। কয়েক দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব বাঁধে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছিল সেগুলো মেরামত করছি। তারপরও কোথাও নতুন করে সমস্যা হলে তাৎক্ষনিক মোকাবেলা করা হবে।

(এমএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১)