এমডি অভি, নারায়ণগঞ্জ : বিএনপি ছাত্রদলের ক্যাডার এবং মাদক, হত্যা মামলার আসামীকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছে নৌকা প্রত্যাশী সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু। সেই ছবি প্রকাশ হওয়ার পর সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপারটিকে দৃষ্টিকটু দাবি করে বলেন, সোনারগাঁওয়ের মতো শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন এমন লোকের হাতে তুলে দেয়া ঠিক হবে না।

বিএনপি ছাত্রদলের কুখ্যাত ক্যাডার হচ্ছে উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী দুলালের ছেলে হৃদয় (৩২) এবং বন্দেরা গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী নাজমুর রহমান সজিব। বৈধ কোন ব্যবসা না থাকলেও এখন তার দুইটি ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। বনে গেছেন কোটিপতিও। বর্তমানে বিএনপি ছাত্রদলের ক্যাডার হৃদয় ও নাজমুর রহমান সজিব ১৫-২০জনে মিলে একটি সেন্ডিকেট করে দেদাছে এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল ও বিয়ার বিক্রি করছে। এ সকল মাদক ও হত্যা মামলার আসামীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেল্টার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কয়েকবার বক্তব্য রেখেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের ২০ মার্চ মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে ৫০০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। পালিয়ে যায় বেশ কয়েকজন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালিক উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে সেই সময় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। যাদের মধ্যে নাজমুর রহমান সজিবকে পলাতক আসামী করা হয়েছে।

এদিকে, উপজেলার দমদমা গ্রামের মঞ্জরুল ইসলামের ছেলে আরমান নামের এক যুবককে গলাকেটে হত্যা মামলায়ও গ্রেফতার হয়েছিল সজীব। পরবর্তীতে জামিনে বেড়িয়ে আসেন।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীকে নিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম নান্নু দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করতে গিয়েছে। সেই ছবি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে করছেন সমালোচনাও।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, জামায়াত-বিএনপির ছাত্রদলের ক্যাডার হৃদয় এবং মাদক, হত্যা মামলার আসামী বির্তকিত সজিবকে নিয়ে বহুবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। তারপরেও পরিবর্তন আসেনি সজিবের চলা ফেরায়। কারণ তার মাথার উপর হাত রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ-যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের। তার উপর নেতারা এতটাই নির্ভরশীল, দলের মনোনায়ন কিনতে যাবে, সেখানেও সজীবকে নিতে হয়। দলে কী আর লোক নেই। সোনারগাঁওয়ের মতো শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন এমন লোকের হাতে তুলে দেয়া ঠিক হবে না।

(এমও/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২১)