সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : নকল ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে জালিয়াত চক্রের সহায়তায় বয়স বাড়িয়ে সরকারি কোষাগার থেকে নিবিঘ্নে বয়স্ক ভাতা উত্তোলন করে নিল ৭০০ জন ব্যক্তি। এমআইএস কার্যক্রম অর্থাৎ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিষ্টেম চালু করার ফলে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিকট এ জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পরে।

কেন্দুয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় জালিয়াতির মাধ্যমে নকল ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে বয়স বাড়িয়ে সরকারি কোষাগার থেকে নির্বিঘ্নে ভাতা উত্তোলন করে নেয়ার বিষয়টি নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ। ইউনিয়ন পরিষদ দোষারোপ করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর কেন্দুয়া উপজেলা শাখাকে আবার সমাজসেবা অধিদপ্তর দোষারোপ করছে ইউনিয়ন পরিষদকে। গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সঞ্জু মিয়া এক সভায় ভাতা বিতরনে অনিয়ম জালিয়াতির জন্য উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সমাজকর্মীদের দায়ী করেন।

তিনি বলেন, তারাই টাকার বিনিময়ে এসব জালিয়াতি করতে সহায়তা করেছেন। কান্দিউড়া ইউনিয়নের বয়ষ্ক ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব যে সময়ে গন্ডা ইউনিয়ন কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন, সে সময়ে তিনি গন্ডা ইউনিয়নে এসব জালিয়াতি কাজে সহায়তা করেছেন।

এ অভিযোগ অস্বিকার করে সমাজসেবা বিভাগের ইউনিয়ন সমাজকর্মী ও বর্তমানে কান্দিউড়া ইউনিয়ন ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ভাতা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে আমাদের কোন হাত নেই। ইউনিয়ন পরিষদের সভায় আমাদের কোন কথার গুরুত্ব না দিয়ে মেজরিটির ভিত্তিতেই ইউনিয়ন পরিষদ ভাতা ভোগীদের তালিকা চূড়ান্ত করে নেন। আমরা শুধু হা করে তাকিয়ে থাকি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ ইউনুস রহমান বুধবার বলেন, সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে এম.আইএস কার্যক্রম চালু হওয়াতে জালিয়াতি করার আর কোন সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ইউনিয়ন ভাতা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সদস্য সচিব সমাজসেবা বিভাগের ইউনিয়ন সমাজকর্মী। এছাড়া সকল ইউপি সদস্য সহ এম.পি মনোনীত দুইজন এবং ইউএনও মনোনিত এক জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে এই বাস্তবায়ন কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ইউনিয়ন পরিষদের সভায় যে তালিকা চূড়ান্ত করে দেয়া হয় সেই তালিকাই উপজেলা পরিষদে অনুমোদ প্রাপ্ত হয়ে ভাতার আওতায় আসে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা নিজেরা বা অন্যের সহায়তায় জালিয়াতি করে নকল ভোটার আইডিকার্ড তৈরি করে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন, তাদের ভাতা ফেরত কিংবা শাস্তির বিষয়ে এখনপর্যন্ত সরকারি কোন নির্দেশনা আমাদের হাতে নেই। তবে শুরু থেকেই বয়ষ্ক ভাতার বিষয়ে জালিয়াতি করে যে ৭শ জন ব্যক্তি সরকারি কোষাগার থেকে ভাতা উত্তোলন নিয়েছেন, এ বিষয়ে তাদেরকে তিরষ্কার করেন তিনি।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১)