চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বহন করা দুটি বাসে ককটেল ও পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিবিরের পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বুধবার ঘটনাস্থল হাটহাজারী উপজেলার নন্দীরহাটের ছড়ারকূল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

শিবিরের আটক হওয়া কর্মীরা হলেন মো. আখতারুজ্জামান (২২), সাব্বির হাওলাদার (২২), মো. ইউসুফ (২৩), ইমরান আলী (২৫) ও মো. তৌহিদ (২৩)। তাঁদের মধ্যে দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে এবং অপর তিনজনকে পাশের মেস থেকে আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, আটক হওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুজন হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুজনকে আটক করেছি। এ ছাড়া তিনজনকে পাশের মেস থেকে ধরেছি। তাদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে তাতে হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কিত খুদে বার্তা পেয়েছি। দুজন সরাসরি ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।’

এদিকে, শিক্ষক বাসে হামলার প্রতিবাদে দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমাবেশ থেকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করা হয়।

আহত শিক্ষকদের মধ্যে আটজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা হলেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন সৈয়দা হালিমা বেগম, জৈব রসায়ন বিভাগের দুই প্রভাষক সোনম আক্তার ও সুনন্দা বৈদ্য, সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক ফাতেমা তুজ জোহরা, ফলিত পদার্থবিদ্যার প্রভাষক সাবরিনা আলম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিরিন আরা চৌধুরী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুজ্জামান ও ফিন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর হায়দার। এ ঘটনায় আহত আমৃতা নাগ নামের এক ছাত্রীকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মেয়ে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল গণি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আহত ব্যক্তিরা আশঙ্কামুক্ত। তাঁদের চারজনের কানে সমস্যা হয়েছে। বাকিরা স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া মাথা ও হাতে ব্যথা পেয়েছেন তাঁরা।’

হাটহাজারী থানার ওসি মো. ইসমাইল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এর জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির ধর্মঘট ডেকেছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

উল্লেখ্য, ছাত্রবাসে বৈধ ছাত্রদের তুলে দেওয়ার দাবিতে সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে ৩১ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট চলছে। তবে সাধারণ ছাত্ররা ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো দাবি করেছে ধর্মঘটের পেছনে শিবিরই রয়েছে। সংগঠনটি এই ধর্মঘটের মধ্যে যেন কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হতে না পারে সেজন্য প্রায় প্রতিদিনই ক্যাম্পাসে, শাটল ট্রেনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে।


চবির শিক্ষক বাসে ককটেল হামলা, আহত ১২


(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪)