রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পকেট কমিটি বাতিল করে নির্বাচনের দাবিতে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ থামাতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এসময় শ্রমিকরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা ভোটের মাধ্যমে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবিতে অনড় রয়েছেন। তবে পুলিশ গুলি ছুড়বার কথা অস্বীকার করেছে। 

ভোমরা হ্যাণ্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ১১৫৫ এর চলমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জানান, ভোমরা স্থলবন্দরে চারটি হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। ১১৫৫ ও ১১৫৯ কমিটির নতুন নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হলে তপশীল ঘোষণার আগেই শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শ্রম অধিদপ্তরের খুলনা শাখা (জেডিএল) গত ৬ জুলাই ১৩ সদস্য বিশিষ্ঠ দু’টি পকেট কমিটি মনোনয়ন দেয়। এ সংক্রান্ত চিঠি গত ৮ সেপ্টেম্বর তাদের নজরে আসে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ে।

একপর্যায়ে জেডিএলএর গঠিত পকেট কমিটি বাতিল করে নির্বাচনের দাবিতে শনিবার সকাল ১১টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের ১১৫৯ শাখার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এই দাবিতে তারা বন্দরে আমদানিকৃত ভারতীয় পন্য খালাস করা বন্ধ করে দেন। চলমান বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট ভবনে শনিবার সকাল ১১টার দিকে তাদেরকে ডাকা হয়। সেখানে উপস্থিত থেকে নির্বাচন ছাড়াই জেডিএল থেকে মনোনীত ১১৫৫ ও ১১৫৯ দুইটি ইউনিয়নের মনগড়া পকেট কমিটির কাগজপত্রে তাদের জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই দুই কমিটির একটির সভাপতি সম্পাদক আনারুল ইসলাম ও আল মাসুদ। অন্যটির মোঃ রেজাউল ইসলাম ও হারুনার রশিদ।

ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টায় শ্রমিকরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এর একপর্যায়ে দুপুর সোয়া দু'টোর দিকে বিশৃংখলা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ শ্রমিকদের তাড়া করে ১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আতংকিত শ্রমিকরা তাদের অফিসের মধ্যে ঢুকে যান। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভোমরা মেইন রোডের উপর অবস্থান নিয়ে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকরা রাস্তার উপর হাঁড়ি পাতিল নিয়ে রান্না শুরু করে। যতদিন নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠিত না হবে, ততদিন ভোমরা স্থলবন্দর অচল থাকবে বলে জানান এই শ্রমিক নেতা।

গুলির বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন বলেন, ফাঁকা গুলি ছোড়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকরা বিক্ষোভের সময় বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল বলে জানান তিনি।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১)