মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের নদী গুলোতে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও ৪২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাশ শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার প্রত্যন্ত নিম্নাঞ্চলের বিদ্যালয় গুলোয় দুই সপ্তাহ আগে মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় মাঠে শ্রেণিকক্ষে ভেতরে পানি দেখা গিয়েছে । বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণী কক্ষে পায়ের গোড়ালি থেকে শুরু করে বুক সমান পর্যন্ত পানি রয়েছে। স্কুল মাঠে মাছ শিকার করছে স্থানীয় লোকজন। এদিকে আজ ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা আসার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি থাকায় এ বিদ্যালয় গুলোতে এখনও প্রস্ততি শুরু হয়নি। ঐসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ করতে পারবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মাঠে ও শ্রেণী কক্ষে পানি থাকার কারণে জেলার ৪২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাশ শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানা যায়, চলতি বন্যায় টাঙ্গাইলের ১ হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৩২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৩৬টি, কালিহাতীতে ৩৯টি, মির্জাপুরে ৮৭টি, নাগরপুরে ৫২টি, গোপালপুরে দুটি, ভূঞাপুরে ২৫টি ও বাসাইলে ৪৮টি। এছাড়াও ৭৯৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার মধ্যে ৯৭টি প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ৩১টি, কালিহাতী ও গোপালপুরে একটি করে, মির্জাপুরে ১৫টি, নাগরপুরে ১৬টি, ভূঞাপুরে ১৬টি ও বাসাইলে ১৫টি এবং সখীপুরে দুটি রয়েছে।

অভিভাবকরা জানায়, পানি কমলেও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ চলাচলের উপযোগী হবে না। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাশ শুরুর বিষয়টি নিয়ে তারাও চিন্তিত।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ জানালেন, ‘ বিদ্যালয়ের মাঠে পানি থাকায় ক্লাশে প্রবেশ করতে সমস্যা হবে। এছাড়াও ময়লা আবর্জনার দুর্ঘন্ধতো আছেই। বন্যার কারণে ১২ তারিখে ক্লাশ নেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি। বিদ্যালয়ের পানির বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, বন্যায় বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। ৯৭টি বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ও ২৫টির শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। অপরদিকে ৫টি বিদ্যালয় আশ্রয়ণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১)