রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মহাদেব সরকারের বিরুদ্ধে জামায়াত কর্মী বাবুর আলীর দায়েরকৃত পরিকল্পিত মামলার তদন্ত শুরুতেই মিথ্যাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ  হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। তারা মামলাবাজ জামায়াত কর্মী বাবুর আলী ও তার জামাতা ভোমরা  কাস্টমস অফিসে  মাষ্টার রোলে জিয়াউর রহমানের আঙুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার নেপথ্য কাহিনী তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল জানান, সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের বাবুর আলীর দু’ বিঘাসহ ৪৮ বিঘা জমি লীজ নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে তিনি ঝিটকি গ্রামে মাছের চাষ শুরু করেন শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিবপুর ইউপি সদস্য মহাদেব সরকার। বছর না ঘুরতেই বাবুর আলী তার ঘের দখলে নেওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে বাবুর আলী তার স্ত্রী খলেদা খাতুন, ভাই জলিলের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা খাতুনকে দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যথাক্রমে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি ও ২৭ জানুয়ারি পৃথক ধর্ষণের চেষ্টার মামলা করে। তদন্তে সত্যতা না পাওয়ায় মামলা খারিজ হয়ে যায়।

ওই বছরের ১৪ জুন খালেদাকে দিয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হত্যার চেষ্টার মামলা করিয়ে তদন্ত ছাড়াই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করানো হয়। একই দিসে ভাইপো বাপ্পি হোসেনকে দিয়ে মারপিটের মামলা করানো হয়। তদন্তে মামলা খারিজ হয়ে যায়। তাতেও সুবিধা করতে না পেরে বাবুর আলীর নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা তার ঘেরের বাসায় হামলা করে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। ভাঙচুর করে লুটপাট করা হয় ঘেরের বাসা। লুট করা হয় ৫০ হাজারের বেশি টাকার মাছ। এ মামলা চলমান রয়েছে। একের পর এক হামলা ও মামলা সহ্য করতে না পেরে মহাদেব সরকার ২০২০ সালে ওই জমি শহরের কামাননগরের জাহিদ হাসান ও ইব্রাহীমের কাছে লিজ দেন। এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন বাবুরালী। এরপর তাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তিনি বাবুর আলীর বিরুদ্ধে থানায় দু’টি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

এ ছাড়া তাকে (মহাদেব) হত্যা চেষ্টার মামলার সাজা হতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকট হয়ে ওঠায় বাবুরালি তাকে ও তার ভাই জয়দেব সরকারসহ প্রতিপক্ষ ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুন ও ২০ আগষ্ট একই ঘেরে কাল্পনিক চাঁদাবাজি ও লুটপাটের অভিযোগ এনে মহাদেব সরকারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ২৪ আগষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বাবুর আলী। তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআই এর উপপরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন গত শনিবার বাদিপক্ষের ও রোববার আসামীপক্ষের বক্তব্য নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। যদিও শনিবার সাক্ষ্য দেওয়ার পর বাবুর আলীর জামাতা লক্ষীদাড়ি গ্রামের ও ভোমরা কাস্টমস এ মাস্টার রোলে কর্মরত অনিয়ম ও দূণীতির মাধ্যমে স্থাবর ও অস্থাবর কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক জিয়াউর রহমান বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমকে ব্যবহার করে মিথ্যাচার করে চলেছেন। তিনি বাবুর আলী ও তার জামাতা জিয়াউর রহমানের খুঁটির জোর কোথায় জানতে চান ?

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ইব্রাহীম হোসেন জানান, মামলার বাদি, স্বাক্ষী, নিরপেক্ষ সাক্ষী ও আসামী পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১)