শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটের সরকারী হাসপাতালগুলোতে আশংকাজনক হারে বাড়ছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতালে গত এক মাসে ১০ হাজারের অধিক শিশু নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর বেসরকারী ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি শিশুদের পরিসংখ্যান মিলিয়ে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের ইতিমধ্যেই সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এই সময়ে সরকারী হাসপাতালগুলোর আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন আক্রান্ত আরো ২০ হাজারেরও অধিক শিশু। গত কয়েকদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালের ধারন ক্ষমতার তিন থেকে চারগুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারনে হাসপাতালে মেঝে ও বারান্দায় চিৎকিসা দেয়া হচ্ছে। জেলার ৯টি উপজেলায় গত ১৫ আগষ্ট থেকে নিউমোনিয়া অক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এসব শিশুদের অধ্যেকই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। 

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারী ক্লিনিক এসোসিয়েশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, মূলত ভাদ্র মাসের গুমটো গরম, হটাৎ বৃষ্টির ঠান্ডাজনিত আবহওয়া পরিবর্তনের কারনে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট সদরসহ ৯টি উপজেলায় নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিবছর আবহওয়া পরিবর্তনের কারনে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হলেও হটাৎ করে গত ১৫ আগষ্ট থেকে বাগেরহাট জেলাজুড়ে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন প্রতিদিন নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত অসুস্থ্য শিশুদের নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ জেলার উপজেলা হাসপাতাল ও বেসরকারী ক্লিনিকগুলোতে ছুটে আসছেন অভিভাবকরা। গত কয়েক দিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা হাসপাতালের ধারন ক্ষমতার তিন থেকে চারগুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারনে হাসপাতালে মেঝে ও বারান্দায় চিৎকিসা দেয়া হচ্ছে। হটাৎ বাগেরহাটের সরকারী হাসপাতাল ও বেসরকারী ক্লিনিকগুলোতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিৎকিসক ও সেবিকারা।

বাগেরহাট সদর হাসপাতাল শিশু বিশেষজ্ঞ, ডা. শিহান মাহমুদ জানান, বাগেরহাট সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ২৪টি। গত ১৫ আগষ্ট থেকে নিউমোনিয়া অক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েকদিনে বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ ধারন ক্ষমতার তিন থেকে চারগুন রোগী ভর্তি রয়েছেন। প্রতিদিনই আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারনে হাসপাতালে মেঝে ও বারান্দায় চিৎকিসা দেয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় চাপ সামল দিতে মেঝে ও বারান্দায় ও রোগী ঠাই দিতে পারছিনা। এসব শিশুদের অধ্যেকই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত একমাসে শুধু বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সাড়ে ৪ হাজার শিশু নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। আর সময়ে জেলা ও উপজেলা হাসপালতালে ১০ হাজারের বেশী শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। জেলা সদরসহ উপজেলা হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যার চেয়ে আক্রান্তের সংখ্য কয়েকগুন হলেও আমরা হাসপাতালে আসা সব আক্রান্ত শিশুদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অভিভাবকদের আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন জেলার এই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার।

(এসএকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১)