মতিউর রহমান মুন্না, গ্রিস : তুরস্ক থেকে অবৈধভাবে গ্রিস যাওয়ার পথে অতিরিক্ত গরমের কারণে 'হিট স্ট্রোক' করে ইমরান আহমেদ চৌধুরী নামের এক বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত ইমরান আহমদ চৌধুরী এবাদ গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের দক্ষিণবাঘা গ্রামের মৃত ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ছেলে। তিনি রেইনবো গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জাস্ট অর্ডারের পরিচালক ছিলেন।

জানা যায়, উন্নত জীবনযাপনের আশায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রায় ২ বছর আগে দেশ ছাড়েন ব্যবসায়ী ইমরান আহমদ চৌধুরী এবাদ। । প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে পরে অবৈধভাবে সাগর পথে পাড়ি জমান ইরানে। সেখানে কিছুদিন থাকার পর ইউরোপে প্রবেশের উদ্দেশ্যে চলে যান তুরস্ক। গত ১৮ জুলাই তুরস্ক থেকে গ্রিসের পথে পাড়ি জমান। এর পর থেকেই কোন খোঁজ মিলছিল না ইমরানের।

অবশেষে জানা যায়, গ্রিসের দক্ষিণে মেসিডোনিয়ার কাছাকাছি শহর আলেকজান্দ্রোপলি এভ্র এলাকার হাই -ওয়ের কাছাকাছি একটি রাস্তা দিয়ে তুর্কি থেকে পায়ে হেঁটে গ্রিসে প্রবেশকালে অতিরিক্ত গরমের কারণে 'হিট স্ট্রোক' করে ইমরান আহমেদ চৌধুরী ওরফে এবাদত মারা যান । মৃত্যুকালীন সময় তার সাথে কোন পরিচয় পত্র না থাকায় গ্রিক পুলিশ অজ্ঞাত লাশ হিসেবে মর্গে রেখে দেয়। দীর্ঘ দুই মাস তার পরিবার কোন খোঁজ না পেয়ে, তার পাসপোর্টের কপি ও ছবি পাঠান গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে। দূতাবাসের সংশ্লিরা বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করার এক পর্যায়ে স্থানীয় এক হাসপাতালের মর্গে লাশের সন্ধান পান। এমনকি সেখানে এর আগে থেকেই অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তির লাশ পরে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু তার সাথে কোন পরিচয় পত্র বা তার পরিবারের সন্ধান না পাওয়ায় এবং বাংলাদেশী হিসেবে কোন পরিচয় না থাকাতে দূতাবাস লাশ হস্তান্তরের কার্যক্রমে যেতে পারছেন না।

দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে ইমরান চৌধুরীর লাশ ১৭ সেপ্টেম্বর এথেন্স এ এসে পৌঁছেছে। লাশ দেশে পাঠানোর সকল কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহ-সভাপতি শাহনুর রিপন জানান, সিলেটের ইমরান নামের যুবকের মরদেহ গ্রিসের সীমান্তবর্তী শহর আলেকজান্দ্রোপলি মর্গে ছিল। দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস ও সিলেট জেলা সংগঠন ইন গ্রিসের সার্বিক সহযোগীতায় তার মৃত দেহ দেশে পাঠাতে প্রক্রিয়া চলছে।

গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন- বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে গ্রিস দূতাবাস সবসময় প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহযোগীতার জন্য সুখে-দুঃখে পাশে থাকবে।

এছাড়াও ওপর অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিতের লক্ষে দূতাবাস ও বাংলাদেশ কমিউনিটি তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার পরিচিত সকলকে গ্রিসে অবস্থিত এথেন্স দূতাবাসে বা বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন দূতাবাস কতৃপক্ষ।

(এম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১)