অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়কপথে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম মহাসড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে যশোর-ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ৫২ কিলোমিটার অংশ।
মোংলা নৌবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে মালপত্র প্রধানত এ পথেই উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আনা-নেয়া করা হয়। তবে মহাসড়কটির অধিকাংশ স্থানে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের কারণে প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের পিরোজপুর, বারোবাজার, কেয়াবাগান, কালীগঞ্জ শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড, নিমতলা বাসস্ট্যান্ড, সদর উপজেলার বিষয়খালী, চুটলিয়া মোড়, লাউদিয়া, মুজিব চত্বর এবং ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের আমতলা, ভাটই বাজার, দুধসর, বড়দাহ চাঁদপুর, গাড়াগঞ্জ, শেখপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ। এতে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিনই যানজটের পাশাপাশি হচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গর্তে পড়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী ও পথচারীরা। সড়ক বিভাগ মাঝেমধ্যে খানাখন্দে ইট ও বালু ফেলে প্রাথমিক সংস্কার করলেও কয়েক দিন পরই তা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।

আব্দুস সবুর নামে এক ট্রাকচালক বলেন, রাস্তা খুব খারাপ। রাস্তায় গাড়ি চালানো খুব কষ্ট। কুষ্টিয়াতে একদম বারোবাজার পর্যন্ত সব জায়গা ভাঙা।

তোফাজ্জেল নামের আরেক চালক বলেন, আসলে ভাই রাস্তা যে রকম করে ভাঙছে, তাতে গাড়ি চালানো খুব কষ্ট। ভাঙার কারণে অনেক সময় গাড়ি ভেঙেচুরে পড়ে থাকে। যে কারণে রাস্তায় জ্যাম বেঁধেই থাকে।

মশিউর রহমান বলেন, ভাঙার কারণে গাড়ির পাতি ভাঙছে। খুব সমস্যা গাড়ি চালানো। দ্রুত এই রাস্তা ঠিক করুক। নইলে এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

শৈলকূপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের বাসিন্দা নয়ন গোপাল বাগচি বলেন, ‘আমি সপ্তাহে ছয়দিন ঝিনেদা যাই। আসা-যাওয়া যে এত কষ্ট তা বলে বোঝানো যাবে না। আর বৃষ্টি হলে তো চলাচল করা যায় না, রাস্তা এত খারাপ।’
বিল্লাল হোসেন নামের এক বাসচালক বলেন, ‘গাড়াগঞ্জ থেকে ঝিনেদা যাতি ১ ঘণ্টা সময় লাগে ভাঙা রাস্তার কারণে। রাস্তা ভালো থাকলি সুমায় লাগত ৩০ মিনিট।’

বাসযাত্রী সাধন সরকার বলেন, ‘এক বছর আগেও রাস্তা সারা (সংস্কার) হয়েছে। আগে যা ছিল, এখন আবার তা-ই হয়ে গেছে। রাস্তা খারাপের কারণে প্রায়ই অ্যাক্সিডেন্ট হয়। রাস্তা সারলি ভালো করে সারুক, না হলি আর সরকারের টাকা নষ্ট করার দরকার নেই।’

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ জানান, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ-যশোর সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। সংস্কারের অনুমোদনও পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। সড়ক সংস্কার যেন সঠিকভাবে করা হয়, সে জন্য কঠোর নজরদারিও থাকবে।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২১)