স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় লবিতে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারা। এ সময় তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে থাকে। তাদের মধ্যকার গণ্ডগোল হাতাহাতির পর্যায়ে রূপ নেওয়ার আগেই দলের অন্যান্য সংসদ সদস্যরা তাদের থামিয়ে দেন।

দশম জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে বৃহস্পতিবার ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া মাগরিবের নামাজের বিরতিতে অধিবেশন মুলতবি করলে জাতীয় পার্টির ‘দুটি গ্রুপ’ গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে। একপক্ষে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা অন্যপক্ষে দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন।

এর আগে বৃহস্পতিবার দলের প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন বাবলু অধিবেশনে যোগ দেন। এর কিছুক্ষণ পর প্রেসিডিয়াম থেকে অব্যাহতি পাওয়া মশিউর রহমান রাঙ্গা ও তাজুল ইসলামও তাদের পেছনের সারিতে নিজেদের আসনে বসেন। তবে রাঙ্গা ও তাজুলের সঙ্গে এরশাদের কোনো কথা হয়নি, কেউ কারও দিকে তাকানওনি। মাগরিবের নামাজের বিরতির সময় বিরোধী দলের লবিতে (১ নম্বর) মহাসচিব বাবলুকে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করেন রাঙ্গা ও তাজুল।

এ সময় মশিউর রহমান রাঙ্গা মহাসচিব বাবলুকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, ‘....বাচ্চা দল কি তুই চালাস? আমার টাকায় দল চলে। বড় নেতা হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিস কার কথায়? উড়ে এসে জুড়ে বসেছিস। যখন তখন যে কাউকে দল থেকে বের করে দিচ্ছিস। আমার এলাকার কমিটি ভেঙে দিচ্ছিস, এগুলো করছিস কেন?

এ সময় উত্তেজিত কণ্ঠে বাবলুকে রাঙ্গা গালাগাল করেন, রাঙ্গা চিৎকার করে বলেন, ‘রংপুরে আমি দল চালাই, আমার টাকায় দল চলে, আর সেখানে নাকি আমার ছবি পোড়ানো হচ্ছে, আমিও এরশাদের একশ ছবি পোড়াব।’

জানা গেছে, এ সময় রাঙ্গার সমর্থনে উচ্চস্বরে কথা বলেন তাজুলও, তিনি বাবলুকে উদ্দেশ করে বলেন ‘আপনি আজ প্রেস কনফারেন্সে আমাকে যুদ্ধাপরাধী বলেছেন। আমি সাতবারের এমপি, কেউ কখনও কোনো অভিযোগ করতে পারেনি। আপনি এ সব মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছেন কেন? বিরোধী দলের উপনেতা হতে না পেরে আপনি এ সব করছেন, উপনেতা হতে চাইলে আপনি আমাদেরকে বলতেন, আপনি তো বলেননি।’

সূত্রমতে বাবলুর সঙ্গে রাঙ্গা-তাজুলের হাতাহাতির উপক্রম হলে দলের কয়েকজন সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে এ নিয়ে এরশাদ তার সংসদ ভবন অফিসে ব্যারিস্টার আনিস ও বাবলুসহ কয়েকজনকে নিয়ে কথা বলেন বলে জানা গেছে।

(ওএস/অ/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৪)