আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : পূর্ব শত্রুতার জেরধরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের চরউত্তর ভূতেরদিয়া গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক মাষ্টারকে (৬৫) পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষরা। 

হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পেতে বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা দৌঁড়ে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের বসত ঘরে আশ্রয় নিয়েও রেহাই পাননি। মুক্তিযোদ্ধাকে রক্ষায় আশ্রয় নেয়া ঘরের রানু বেগমসহ দুই নারী আহত হয়েছেন। অপরদিকে বাবাকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধার দুই পুত্রকেও মারধর করেছে।

গুরুত্বর আহত মুক্তিযোদ্ধাসহ বৃদ্ধা নারী রানু বেগমকে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে বৃস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হককে তার বাড়ির পাশের রাস্তায় একা পেয়ে প্রতিপক্ষ ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, তার পুত্র মেহেদী হাসান, ইমাম হোসেন, কাউসার হোসেন হাওলাদারসহ ৭/৮ জনে হামলা চালায়। এসময় তিনি (মুক্তিযোদ্ধা) জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমানের বসত ঘরে আশ্রয় নেয়।

সূত্রমতে, হামলাকারীরা ওই ঘরে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় মুক্তিযোদ্ধাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের স্কুল পড়ুয়া কন্যা আফসানা আক্তার মিমি ও ৭০ বছর বয়সের বৃদ্ধ বোন রানু বেগমকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে। হামলার খবর পেয়ে বাবাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধার দুই পুত্র নাঈম হাওলাদার (২৪) ও ইমনকে (১৮) মারধর করে আহত করেছে।

শুক্রবার সকালে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এইচএম মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিপক্ষের হাত থেকে রক্ষা পেতে মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক মাষ্টার আমার ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলো। কিন্তু হামলাকারীরা জোরপূর্বক আমার বসত ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে সামসুল হককে মারধর করে। এসময় আমার মেয়ে মিমি ও বেড়াতে আসা আমার বৃদ্ধ বোনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তিনি (মিজানুর রহমান) মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

আহত মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক মাষ্টার বলেন, জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরধরে হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যা করার জন্য হামলা চালিয়েছিলো। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১)