সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সড়কের দুইপাশে পার বিহীন পুকুরের জন্য কুলিয়ারচর সদরে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলো বেহাল দশা। প্রতিদিনই এসব পার বিহীন পুকুরে পারে ভেঙে যাওয়া ও দেবে যাওয়া সড়কের অংশে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন, আহত হচ্ছে অসংখ্য যাত্রী। কুলিয়ারচরে প্রবেশ করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ছাড়া একটি দিন যেনো বর্তমানে স্বপ্নের মত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুলিয়ারচর সদরে প্রবেশের প্রধান তিনটি সড়কের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক হলো বাজরা বাসস্ট্যান্ড থেকে সদরে ঢুকার (শিল্প সড়ক) সড়কটি। এই সড়কের দুপাশের উপজেলার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠায়, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শত শত পণ্যবাহী ভারী যানগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে।

এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত এক মাসে এই একটি সড়কেই ২০টির অধিক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আগরপুর বাজার ও জামতলী মোড় হয়ে সদরে ঢুকার সড়কেও একই দশা। এ সড়কেও গত একমাসে ১৫ থেকে ২০টি মতো দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বর্তমানে এই সড়কের বেহাল দশার জন্য পণ্যবাহী ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ অনুপযোগী। তাই এই সড়কে ভারী কোনো পণ্যবাহী যান চলাচল করছে না।

এছাড়া দ্বাড়িয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড থেকে সদরের ঢুকার মূল সকড়টি আরও নাজেহাল এবং এই সড়কের ভাটিদয়ারিয়া এলাকায় গণকখালী খালের উপর ব্রীজ পুননির্মাণের কাজের জন্য, নির্মিত ডাইমেনশন সড়কটি ভারী যান চলাচল উপযোগী না হওয়ায় এবং অত্যাধিক ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন (শিল্প সড়ক) বাজরা বাসস্ট্যান্ড থেকে সদরে ঢুকার সড়কটি একমাত্র সড়কে পরিনত হয়েছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এই সড়কের দুই পাশে পার বিহীন পুকুরের জন্যই সড়কটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তের শিকার। সড়কটি সংস্কার করা হলেও, ভারী যান চলাচলে অল্পদিনেই সড়কের দুপাশের মাটি দেবে গিয়ে পুকুরগুলোতে বিলীন হচ্ছে। ফলে বছর বছর পার বিহীন এসব পুকুরের জন্য নষ্ট হচ্ছে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ এবং প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কাজ।

এই বিষয়ে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক বলেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রাস্তার পাশে, রাস্তাকে পার হিসবে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত হচ্ছে পুকুর। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় উপজেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের কারও এসব বিষয়ে নজরদারি নেই। অসংখ্য বার এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করেছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ এসব পুকুরের জন্য প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে হচ্ছে এবং সেই কোটি টাকার আবার ২/৩ মাসেই পুকুরে বিলীন হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেইন বলেন, এই মুহুর্তে এই সড়কটি পুননির্মাণ হচ্ছে না। তবে চার কিলোমিটার সড়কের মধ্যে দুই কিলোমিটার রিপেয়ারের টেন্ডার হয়েছে এবং বাকি দুই কিলোমিটার গতবছর রিপেয়ার হয়েছে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১)