এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিলীনের পথে। গত শুক্রবার থেকে পদ্মা নদীর ভাঙনে পরে বিদ্যালয়টি।

আজ শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গেল কাল থেকে শুরু হওয়া নদী ভাঙন এখন থামেনি। বিদ্যালয়ের আর অল্প কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার।

এলাকাবাসী বলে, গত কাল যখন নদী ভাঙন সৃষ্টি হয় তখন বিদ্যালয় সহ ১০০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আর আমাদের চোখের সামনে আস্তে আস্তে বিদ্যালয় টি নদীর পানি তে ভাসতে থাকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ গত তিন বছর আগে যখন এই বিদ্যালয়ের আসপাশ ভাঙন দেখা দেয় তখন বালুর বস্তা ফেলা হলে ভাঙন রোধ হয়। তবে এবার সেই বস্তা সরিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ স্থায়ী সমাধানের নামে দুরনীতি করার কারণে আজ বিদ্যালয় টি বিলীন হলো।

তবে মনে করা হয়েছে অত্র এলাকায় একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বিলীন হওয়ার ফলে শিক্ষার দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়াতে পারে এই এলাকার শিশুরা। এই প্রতিষ্ঠানে ১০৮ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে অধ্যায়নরত ছিলো।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকির বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলাের পর থেকে বিদ্যালয়ের মূল ভবনেই পাঠদান করাচ্ছিলাম। হঠাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর ভোরে স্কুলের পাশেই সিসি ব্লক ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ার পর থেকে আর ওখানে পাঠদান করাইনি। কারণ তখন মূল ভবনটি চরম ঝুঁকিতে ছিল। শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পাশের টিনশিডে ক্লাস নিচ্ছিলাম। কিন্তু আজ স্কুল নদীতে ভেঙেই গেল।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ বলেন, পদ্মা নদীর পানি কমার কারণে হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের খবর পেয়ে দ্রুতগতিতে জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছিল। স্কুলটিসহ গ্রামটি রক্ষা করার জন্য আমাদের পদক্ষেপ অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, রাজবাড়ী শহর রক্ষায় পদ্মা নদীর তীরে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের কাজ হয়েছে সাত কিলোমিটার এলাকায়।কাজটি সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড। ভাঙন রোধে ২০১৮ সালের জুন মাসে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের ডান তীর প্রতিরক্ষার কাজ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাটে তিন ও মিজানপুরে দেড় কিলোমিটারসহ সাড়ে চার কিলোমিটার এবং ২০১৯-এর জুলাইয়ে শুরু হওয়া (প্রথম সংশোধিত) শহর রক্ষা বাঁধের গোদার বাজার অংশের আড়াই কিলোমিটারসহ মোট সাত কিলোমিটার এলাকায় ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে দ্বিতীয় পর্যায়ের সাড়ে চার কিলোমিটারে ৩৭৬ কোটি ও প্রথম সংশোধিত ১৫২৭ মিটারে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্পের জন্য ৮.৩ কিলোমিটার অংশে ৪৯ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১)