মানিক বৈরাগী


বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। হাজার বছরের পরাধীনতার গ্লানি থেকে বাঙালি জনগোষ্ঠী কে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, স্বতন্ত্র জাতীস্বত্ত্বায় প্রতিষ্ঠা করতে এ জনজাতি গোষ্ঠীর হাজার বছর লড়াই সংগ্রামের পাশাপাশি সাহিত্য সাংস্কৃতিক ভাষার লড়াই করতে হয়েছে।

হাজার বছরের পরাধীনতা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে এই পরাধীন জাতি কে যে মানুষ টি মুক্তির স্বাদ দিয়েছেন তিনি হলেন বাঙ্গালির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ডাকে এদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
এ জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন, দুই লক্ষ মা-বোনেরা ইজ্জত হারিয়েছেন। তবুও সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির পাশাপাশি এদেশীয় তাদের দোসরেরা বাঙালি জাতি কে আবারও পরাধীন করতে ১৯৭৫ এ বাঙ্গালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার কে হত্যা করে। কিন্তু লড়াকু এ জাতি কে দমিয়ে রাখা যায়নি।

আবারও নিজদেশে পরাধীনতার লড়াইয়ে যে মানবী তাঁর লেখনি দিয়ে এ জাতিরাষ্ট্রের সমস্যা, সম্ভাবনা, গলদ কোথায়, কখন, কি করতে তা নিয়ে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি যিনি কলমের লড়াইয়ে এখনো সচল তাঁর নাম শেখ হাসিনা। যিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। মেধাবী এ লেখক, গবেষক, দার্শনিক শেখ হাসিনার প্রকাশিত বই নিয়ে আমি প্রতি বছরের ন্যায় এবারে ও বই মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছি।

অনেকের প্রশ্ন তোমার কেন এতো দায়, কি পেয়েছে এ রাজনীতি করে, সবকিছুই তো হারালে। আমি তাদের কে বলবো হারিয়েছে খুব সামন্যই কিন্তু বঙ্গবন্ধু - শেখ হাসিনার জন্য তো কিছুই করতে পারিনি। বাংলাদেশ কে জানতে হলে শেখ হাসিনার বই পড়তে হবে, শেখ হাসিনার রাজনীতি করবেন কিন্তু তার রাজনীতি, দর্শন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবেন এটা হতে পারে না।

তথ্য প্রযুক্তির যুগে যেমন অবাধ তথ্যপ্রবাহ আছে তেমনি ভাবে অবাধ অপতৎপরতার মিথ্যা বানোয়াট তথ্য সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে গেলে শেখ হাসিনা কে জানতে হবে। শুধু সভা মঞ্চে প্রতিদিনের চল্লিশ বছরের পুরনো বক্তব্য দিয়ে আর জনতা কে কাছে টানা যাবে না নতুন যুগের নতুন সম্ভাবনার কথা ও বাস্তবতা দিয়ে শেখ হাসিনার রাজনীতি করতে হবে। না হয় আপনি রাজনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনৈতিক সংগ্রামে বিশ্ব থেকে ছিটকে পড়বেন। তো আগামীর চেলেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে আপনার সন্তান কে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই আপনার ঘরে ড্রয়িং রুমে একটি বুকসেল্প স্থাপন করুন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন ঘরে অবসরে জেলখানায় বই পড়তেন বলেই সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিতে পেরেছেন। ঠিক তারই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও এক পৃষ্ঠা হলেও বই পড়তে ভুলেন না। তিনি যেখানেই যান না কে কেন তার ব্যাগে তিনি বই নিতে ভুলেন না। এ কারনেই তিনি লেখক, গবেষক এবং একজন রাষ্ট্র দার্শনিক। তো যে মানুষ টি ২১বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে মহাপ্রভু তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন মানুষের কল্যানের জন্য তাঁর লেখা বই নিয়ে একটি বইমেলাও যদি আমি করতে না পারি তাহলে আমি কিসের কবি, কিসের শেখ হাসিনার কর্মী।

শেখ হাসিনা বইমেলা আরও বেশি প্রয়োজন এ কারনে আমাদের স্কুল কলেজের লাইব্রেরি সমুহে আমি দেখেছি শেখ হাসিনার লেখা প্রয়োজনীয় বইগুলো নেই,ছাত্রছাত্রীরা শেখ হাসিনার রাজনীতি, দর্শন সম্পর্কে জানাতে হলে তাদের জন্য পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় বইয়ের প্রয়োজন। কিন্তু অনেক স্কুলের লাইব্রেরি খোলা হয়না, অনেক স্কুল কলেজে লাইব্রেরিয়ান নাই। আশাকরি এ মেলায় থেকে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিটি স্কুলে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে চাহিদাপত্র পাঠাবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি থেকে তাদের প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করে পড়তে পারবে। এবং কক্সবাজার শিক্ষা কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা) এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে বলে আমার বিশ্বাস।

বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, শেখ হাসিনার বই নিয়ে শিক্ষার সংগ্রাম কক্সবাজার থেকেই শুরু হোক। আসুন এবারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ২৮-২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর বইমেলা সফল করি, নিজের ঘর কে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বই কিনে নিজে আলোকিত হই নিজের ঘর কে আলোকিত করি।

লেখক : কবি ও রাজনৈতিক কর্মী।