মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : আবহমান বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ও শতবর্ষের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ নৌকা বাইচ। নদীমাতৃক বাংলার গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির সেই ঐতিহ্য বুকে ধারণ করে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন নদ-নদী ও বিল-বাঁওড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। এর ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ধুলটিয়া গ্রামের ৩০০ পরিবার চাঁদা দিয়ে তৈরি করছে স্বপ্নের ৬৯ হাত বাইচের নৌকা। গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধের স্বপ্ন এখন থইথই জলে ঢাকঢোলের তালে গ্রামবাংলার গান আর মাঝিমাল্লার বইঠার ছন্দে খালবিল-নদীর শান্ত জলে ঢেউ মাতিয়ে তোলার।

বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বাইচের নৌকা নির্মাণের দক্ষ কারিগর আব্দুর রহিম তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ৬৯ হাত দৈর্ঘ্যের নৌকাটি বাইচের উপযোগী করে তুলতে ব্যস্ত দিন পার করছেন। নৌকা নির্মাণস্থলে গ্রামের নানা বয়সী শতাধিক মানুষ উপস্থিত থেকে নৌকা তৈরিতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।

নৌকা তৈরির কারিগর আব্দুর রহিম জানান, প্রতিদিন পাঁচজন সহযোগী নিয়ে নৌকাটি তৈরিতে তিনি বিরামহীনভাবে কাজ করছেন। বাইচের এই নৌকা নির্মাণে ১০ দিন সময় লাগবে। ১০ দিন পর নৌকাটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। তিনি দাবি করেন, ৩৩ বছরে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি নানা ধরনের দুই শতাধিক নৌকা তৈরি করেছেন।

নৌকা নির্মাণ কমিটির আহ্বায়ক ধুলটিয়া গ্রামের লিয়াকত আলী জানান, গ্রামবাসী ৬৯ হাত বাইচের এই নৌকার নাম দিয়েছেন 'বাংলার নবাব একতা ধুলটিয়া’। প্রায় ১০০ সিএফটি পাইয়া ও গজারিগাছের কাঠ দিয়ে নৌকার নির্মাণকাজ চলছে। এতে নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা।

নৌকা নির্মাণ কমিটির সদস্য আলতাফ মিয়া বলেন, নৌকাটি বাইচ দিতে ৬২ জন বাইচার (মানুষ) প্রয়োজন হবে। গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার খুশি মনে চাঁদা দিয়ে নৌকা তৈরির খরচ বহন করছে।

(এসএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১)