নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দা থানার এসআই শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা ছাড়াই দু’ব্যক্তিকে থানা হাজতে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে চোখ বেঁধে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের হাজতে আটকে রেখে স্বজনদের সঙ্গে তিনি দেনদরবার করেন দু’দিন ধরে। বনিবনা না হওয়ায় অবশেষে আটককৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে একটি প্রতারনার মামলা।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, একই মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে বুধবার রাতে ছেড়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার আরেক আসামিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন তিনি। এনিয়ে পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সুত্রটি জানায়, মঙ্গলবার বেলা ১০টা দিকে থানার উপ-পরিদর্শক শরীফুল ইসলাম মামলা ছাড়াই উপজেলার কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের চকগোপাল মোল্লাপাড়া গ্রামের হবির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল আজিজকে (২৩) ধরে থানা হাজতে আটক রাখেন। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে চোখ বেঁধে দফায় দফায় মারপিট করা হয়। পরে ওই রাতে চকগোপাল গ্রামের ছফির উদ্দিনের ছেলে খোদাবক্সকে (৪৫) একইভাবে ধরে এনে হাজতে আটক রাখা হয়।

হাজতে এই দু’জনকে আটক রেখে তাদের স্বজনদের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করেন তিনি। বনিবনা না হওয়ায় দুইদিন পর আটককৃতদের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেল ৫ টা ৫৫ মিনিটে প্রতারনার একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। যার নম্বর ১৩, ধারা ৪০৬/৪২০/৩৭৯/৫০৬ দঃবিঃ। নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মিলন হোসেনকে বাদি করিয়ে মামলাটি রেকর্ডভুক্ত কাজে সহায়তা করেন দারোগা শরীফুল ইসলাম। মামলায় খোদাবক্স, আব্দুল আজিজসহ আরো ৭জনকে আসামি করা হয়েছে।

সুত্রটি আরো জানায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে অসুস্থতার অজুহাতে আসামি খোদাবক্সকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান দারোগা শরীফুল ইসলাম। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফেরার পথে ফেরিঘাট এলাকায় তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন তিনি। তবে কি কারণে আসামিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সুত্রটি তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে খোদাবক্সকে ছেড়ে দিয়েছে শরীফুল ইসলাম। তবে টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দারোগা শরীফুল ইসলাম বলেন, আসামি খোদাবক্স থানা হাজতে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার পর মুচলেকা নিয়ে ভাইয়ের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে পুলিশ আসামি খোদাবক্সকে নিয়ে জরুরি বিভাগে আসেন। এসময় তিনি সম্পূর্ণরুপে সুস্থ ছিলেন। শুধুমাত্র পুলিশের অনুরোধে তার নাম সাধারন রেজিস্টারে এন্ট্রি করে রেফার্ড দেখানো হয়েছে। এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানান, এমন ধরনের ঘটনা তার জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(বিএম/এটিঅার/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৪)