মাগুরা প্রতিনিধি : সরকারি ওষুধ ব্যবহার করে নিজেই গ্রামে-গ্রামে রোগী দেখেন এবং অতিরিক্ত ফিস গ্রহণ করায় গ্রাম্য দরিদ্র জনসাধারণ একদিকে হয়রানি, অন্যদিকে অতিরিক্ত অর্থ খোয়ায়েও উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসাধীন অধিকাংশ গরু-ছাগলই পঙ্গুত্ব ও মৃত্যুবরণ করছে বলে অভিযোগ সুত্রে জানা যায়।

কল পেলেই অফিস ফেলে সরকারী ওষুধ ব্যাগে ভরে পশু চিকিৎসা দিতে নিজেই ছোটেন গ্রামে-গ্রামে পশুর মালিকদের বাড়িতে। ফিস বাবদ হাতিয়ে নেন বড় অংকের অর্থ। সেবার নামে অর্থ হাতানোই তার প্রধান কাজ। অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ তার চিকিৎসাধীন অধিকাংশ গরু-ছাগল সুস্থ না হওয়া এবং মুমূর্ষ পশু বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান শালিখা উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা হিসাবে গত মে মাসে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন গ্রামের পশু চিকিৎসক নাম ধারী কোয়াক পশু ডাক্তারদেরকে কমিশনের লোভ দেখিয়ে সোর্স হিসাবে নিযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে গ্রামে-গ্রামে অসুস্থ পশুর চিকিৎসা করছেন। অসুস্থ পশু চিকিৎসা করতে কোন বাড়িতে গেলেই তিনি ওষুধসহ যাতায়াত খরচ বাবদ ১৫শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা আদায় করছেন। ভ’ক্তো ভোগী পশু মালিকদের মধ্যে জুনারী গ্রামের কুদ্দুস সরদার জানান আমার একটা বাছুরের অসুখ হলে ডাক্তারকে দেখালে তিনি বাছুরটির চিকিৎসাদেন। চিকিৎসা বাবদ তিনি প্রথমে ১২শ টাকা ও পরে ৭শ টাকা নেন। বাছুরটি তার চিকিৎসায় সুস্থ না হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়লে আমি বাধ্য হয়ে কসাইদের নিকট পানির দরে বিক্রি করে দেই।

এ সমস্যা শুধু কুদ্দুস সরদারের নয়, সামান্য অসুখেই দক্ষিন শরুশুনা গ্রামের মৃত অধীর বিশ্বাসের পুত্র তপন বিশ্বাসের নিকট থেকেও ১৬শ টাকা, হাজরাহাটি গ্রামের অতুল পাঠকের পুত্র গনেশ পাঠকের নিকট থেকে ১৫শ টাকা, শতখালী ইন্দ্রা পাড়ার মিকাইল মোল্যার নিকট থেকে ১৮শ টাকা, ধনেশ্বরগাতী নারায়ন বিশ্বাসের নিকট থেকে ১২শ টাকা, আনন্দনগরের মশিয়ারের নিকট থেকে ১ হাজার টাকা, ছয়ঘরিয়ার কামরুলের নিকট থেকে ১৬শ টাকা ফিস নিলেও তাদের একটা গরুও সুস্থ হয়নি বলে তারা জানিয়েছে।

ভূক্তভোগীরা আরও জানান শুনেছি তিনি এ উপজেলার বড় পশু ডাক্তার। তিনি গরু দেখে তার সাথে থাকা ব্যাগের চেন খোলেন, ওষুধ বের করে সিরিজ্ঞে ভরেই পশুর শরীরে ফোটানো শুরু করেন। ফোটানোর শেষে ওষুধের বড় এক ফর্দ্দ দিয়ে চলে যান। তাদেরকে ওষুধের বোতলের চেহারা ও লেবেল দেখতে দেয়া হয়না। ব্রবহৃত ওষুধের কোন কাগজ,ঠোঙ্গা বা খালি শিশি বোতল ব্যবহারের সঙ্গে-সঙ্গে ব্যাগে ভরে নিয়ে যান। তাদের সন্দেহ ডাক্তার সাহেব বিনা মূল্যের সরকারি ওষুধ আমাদের কাছে বিক্রি করেন।

দরিদ্র, অসহায় পশু মালিকরা পশু চিকিৎসা সেবার নামে অতিরিক্ত ফিস আদায়, সরকারি ওষুধ বিক্রি করে অর্থ উর্পাজন ও ভুল চিকিৎসার প্রতিকারের সুব্যবস্থা চায়।

এ ব্যাপারে ডা. সিদ্দিকুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি উত্তরাধিকার নিউজকে জানান –আপনারা যা জেনেছেন আসলে তা ঠিক নয়। এটা ষড়যন্ত্র।

(ডিএস/এটিঅার/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৪)